ক্লোজআপের গল্প-


এই দূর দেশ থেকে কংকাবতীরে ফোন করি। আলাপ শুরু হলে ঘড়িতে কয়টা বাজে সেই খেয়াল আর থাকে না, কার্ড শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকে, চলতেই থাকে।
কিন্তু কংকার খেয়াল থাকে, সব দিনে নয় অবশ্য- বিশেষ করে সেই দিনগুলোয়, যেদিন টিভিতে ক্লোজ আপ ওয়ান থাকে! সেদিন আগে থেকেই এসএমএস আসে, আজ কিন্তু সাড়ে নটা থেকে ক্লোজ আপ ওয়ান, শেষ হলে ফোন করবি, তার আগে না।
মনের ভুলে আমি যদি নয়টায় ফোন করেই ফেলি, সাড়ে নটায় শুরু হয়ে যায় ম্যাডামের উশখুশানি, এই, ফোন রাখ! ক্লোজ আপ ওয়ান দেখব!

বুঝো ঠেলা!
এখন এই ক্লোজ আপ ওয়ান ব্যাটার ওপর আমার মেজাজ খারাপ না হবার কোন কারণ আছে? কত্ত বড় সাহস, আমার সাথে কম্পিট করে!

কদিন আগে জাম্প টিভি সাইটে সস্তার প্যাকেজে এনটিভির নিউজ দেখার জন্যে সাবস্ক্রাইব করলাম। কংকা শুনে টুনে বললো, একদিন ক্লোজআপ ওয়ানটা দেখ। আমি গাল ফুলিয়ে বললাম, না! অসম্ভব!
তবু পীড়াপীড়িতে অনিচ্ছাসত্বেও দেখলাম একদিন।
দেখে বেশ ভালই লাগলো। দেবাশীষকে মহা বোরিং মনে হলো, চৈতীর উচ্চারণ শুনে খানিকটা ভড়কেছি, আর আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কান্ডকারখানা দেখে পেট ফাটিয়ে হেসেছি!
কিন্তু এই সব বাদ দিলে সব মিলিয়ে খুব চমৎকার একটা প্রোগ্রাম। ব্যবসা-বুদ্ধি, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর পণ্যের বিজ্ঞাপণ- এইসব ভারি দেয়ালের ভেতরে উঁকি মেরে দেখি, আর কিছু না হোক, খুব চমৎকার কিছু গান শোনা হচ্ছে এদের কল্যাণে। শুনলাম দেশেও নাকি একটা সুন্দর পরিবর্তন আসছে, তরুণরা বাংলা গান শুনছে। মোবাইলের রিংটোনে ধুম মাচা লে-র পরিবর্তে শোনা যাচ্ছে- ও রে নীল দরিয়া...।
ইম্প্রেসিভ!

অনেকদিন পর শুনলাম খুব প্রিয় একটা গান, আমার দুই চোখে দুই নদী, তুমি দু'হাত ভরে পানি নিও, তৃষ্ণা লাগে যদি!
এই লেখাটা লিখছি আর গুন গুন করছি।

-------------
ভাল খবর।
আমার খুব প্রিয় ইউটিউবে সার্চ দিতেই দেখি ওখানে একগাদা ক্লোজআপ ওয়ানের ভিডিও তুলে রাখা! একেবারে তুলকালাম ব্যাপার স্যাপার!
গুনগুনটাই মনে হচ্ছে অচিরেই গলা ফাটিয়ে চিৎকার হয়ে যাবে! :-)
দোয়া রাইখেন সবাই!
আমি আপাতত ক্লোজআপ ওয়ান দেখতে গেলাম।

Popular posts from this blog

আরেকটিবার-

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

মধ্যাহ্নভোজ | উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ | রূপান্তরঃ তারেক নূরুল হাসান