Posts

Showing posts from March, 2024

আনটিল অগাস্ট | গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস

Image
  এ মাসেই প্রকাশিত হয়েছে লাতিন আমেরিকার নোবেলজয়ী ঔপন্যাসিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের শেষ প্রকাশিত উপন্যাস আনটিল অগাস্ট। এ লেখকের অন্য উপন্যাসের সাপেক্ষে এ উপন্যাসটি কেমন, এর বিষয়বস্তুইবা কী? প্রথম আলো লিঙ্ক:  https://www.prothomalo.com/onnoalo/n7o3a3k35s আ নটিল অগাস্ট বইটা পড়া শুরু করতেই গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের সেই চিরচেনা ‘সিগনেচার স্টাইল’ চোখে পড়ল। দীর্ঘ দীর্ঘ সব বাক্য, আর প্রতিটা বাক্যেই অনেক অনেক সব তথ্য। কিন্তু সেগুলোর কোনোটাই ফেলনা বা অতিরিক্ত মনে হয় না এবং সেই একই রকম করে বলার ভঙ্গিতে কোনো আড়ষ্টতা নেই, যেনবা গল্প বলছেন না তিনি, বরং সাংবাদিক হিসেবে পত্রিকার প্রতিবেদন লিখছেন। উদাহরণ হিসেবে এই বাক্যটিকে ধরা যাক, ‘গ্রামের মানুষদের দারিদ্র্য দেখে তার হতাশ লাগল, দুটো পামগাছের মধ্যে একটা হ্যামক ঝুলিয়ে তারা সেখানে ঘুমায়; যদিও এই গ্রামটি এই দেশের এক কবি ও গালভারী সিনেটরের জন্মভূমি, যে কিনা দেশের প্রায় রাষ্ট্রপতিই হয়ে বসেছিল।’ অথবা এই বাক্য, ‘তার ছেচল্লিশ বছর জীবৎকালের সাতাশ বছরই সে এই পুরুষের সঙ্গে একটি সুখী বিবাহিত জীবন কাটাচ্ছে; যাকে সে ভালোবাসে এবং পুরুষটিও তাকে, যাকে সে ব

জবরখাকি | বর্ণালী সাহা

Image
  'জবরখাকি' বইয়ের ভাষাভঙ্গি মুগ্ধ হওয়ার মতো। লেখক প্রচুর বাংলা শব্দ ব্যবহার করেছেন দেখে শান্তি পেলাম। ঘুরে ফিরে অল্প কিছু শব্দেই অনুভূতি প্রকাশের প্রচলিত যে স্টাইল, সেটাকে শব্দ-কানা রোগ বলা যায়। আর এখনকার শব্দ-কানা লেখকেরা বিভিন্ন অনুভূতিকে একটা নাম দিয়েই কাজ চালিয়ে দেন। ভালো লাগলো দেখে যে এই সময়ের লেখক হয়েও বর্ণালী সেই দোষ থেকে মুক্ত। যেকোনো অনুভূতি প্রকাশের জন্যে ঠিকঠাক শব্দ খুঁজে নিয়ে বাক্যে বসিয়েছেন তিনি, কিন্তু তা করতে গিয়ে লেখার গতি বা ফ্লো একটুও কমাননি। সবগুলো গল্পই তরতর করে পড়ে ফেলা গেছে। আবার সেই ভাষাভঙ্গিও সব গল্পে একইরকম থাকেনি। মানে লেখক নিজস্ব স্টাইল সৃষ্টির গোয়ার্তুমি করেননি, বরং গল্পের বিষয় ও চরিত্র অনুযায়ী সেটা প্রয়োজনমাফিক বদলে নিয়েছেন। তাতে করে স্বকীয়তা নষ্ট হয়নি, আবার গল্পের ভাষায়ও দরকারী একটা স্পেস এসেছে, এটা ভালো লেগেছে। কারণ, আমার মনে হয়, সবার উপরে গল্প সত্য, তার উপরে এমনকি লেখকও নয়। সবকটি গল্পেই বর্ণালী সাহার পর্যবেক্ষণের গভীরতা লক্ষ্য করার মতো। প্রায় শতবর্ষ আগে ক্রিস্টোফার ইশারউড নিজের কলমটাকে ক্যামেরা বানিয়ে বার্লিন শহরের গল্প শুনিয়েছিলেন আমাদের। বর্ণাল

দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই | জে ডি স্যালিঞ্জার

Image
অদ্ভুত এই বইটার শুরুর দিকে একবার মনে হলো, হোল্ডেন কফিল্ডের মধ্যে পছন্দ করার মত খুব বেশি কিছু নেই। আবার হয়তো আছেও, কে জানে! ভালো একটা স্কুলে পড়তো, কিন্তু ভালো লাগে না বলে ক্রিসমাসের ছুটির আগে আগে সে স্কুল ছেড়ে দিচ্ছে। ( অথবা এটাও বলা যায়, শুধু ইংরেজি ছাড়া আর কোনো বিষয়ে পাশ করতে পারেনি বলে স্কুলই তাকে ছেড়ে দিচ্ছে।) ছুটি যেদিন হবার কথা, তার কয়েকদিন আগেই বের হয়ে যায় হোল্ডেন। বাবা-মাকে বলা যাবে না, তাই বাড়ি না গিয়ে বাকি সময়টা পার করতে হবে এই শহরেই। এই দিনগুলোর গল্প নিয়েই এই বই। চেষ্টা করলাম যতটা নিরাসক্তি নিয়ে বলা যায়, তবে স্বীকার করছি, পড়তে গিয়ে আগ্রহ চেপে রাখা যায়নি। ঘটনার জন্যে যতটা, তারচেয়ে অনেক বেশি যেভাবে বলা হয়েছে গল্পটা তার জন্যে। সম্ভবত বলার (বা লেখার) এই সাংঘাতিক স্টাইলটাই এই বইয়ের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব। বইয়ের মাঝপথে গিয়ে হোল্ডেনের লাগামছাড়া ভাবনাগুলি পড়তে পড়তে বহুবার হিংসা হয়েছে। মনে হয়েছে, এভাবে বলতে বা লিখতে পারলে দারুণ হতো। প্রতিটা ক্লিকের সাথে সাথে ছবির সঙ্গে অটো-ফিল্টার জুড়ে যাওয়ার এই ভানসর্বস্ব সময়ে বসে, স্যালিঞ্জারের রাখঢাকবিহীন অকপট ছবির মতন বিরতিহীন এই উপন্যাস শেষ করে সত্যি