Posts

Showing posts from June, 2023

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

Image
  কুইন্সটাউন এয়ারপোর্টের ওয়েটিং লাউঞ্জে কয়েকটা খাবার দোকানের পাশে একটা বইয়ের দোকানও আছে। ফ্লাইটের জন্যে অপেক্ষা করার ফাঁকে সেখানে ঢুকে প্রথম কয়েকটা পাতা উল্টেই এই বইটা বেশ ভাল লেগে গেল। এরকম মোটা নিবের কালি-কলমের লুজ স্ট্রোকে আঁকা আর জলরং এর ওয়াশ দেয়া ইলাসট্রেশন আমার খুব ভাল লাগে। অনেকটা মোটা তুলির টানের মত। বইয়ের গল্পটাও বেশ। অবশ্য নির্দিষ্ট কোনো গল্প আছে এখানে, সেরকমটা বলা যাবে না। বরং এখানে একটা ভ্রমণের গল্প বলা। আর সেই ভ্রমণের বাঁকে বাঁকে দারুণ সব আত্মোপলব্ধি জুড়ে দেয়া। "আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে কোনো ঘটনায় আমরা কী প্রতিক্রিয়া দেখাব সেই স্বাধীনতা থাকা।" এই কথাটা, এবং এরকম আরও কয়েকটা কথা খুব সুন্দর করে বলা এখানে। কেমন স্বস্তি দেয় মনে, এক ধরনের অ্যাফার্মেশনের মত। বুড়ো হয়ে গেছি বলেই হয়ত এখন আর উপদেশ-ঘেঁষা কথা খুব বেশি উপভোগ করতে পারিনা। তবে এই বইটা পড়ে যেতে বেশ শান্তি লাগলো। সব মানুষই হয়ত কোনো না কোনো ভাবে একটা বোধিবৃক্ষের খোঁজ করে মনে মনে।

ঊনগল্প | আশীর্বাদ ২০২৩ | তারেক নূরুল হাসান

Image
  অনাহারে চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে দেখতে পেয়ে ভিক্ষা চাইতে আসা মানুষটাকে দরজার পাশে বসিয়ে বেশ খানিকটা ডাল-ভাত খেতে দিল বাড়ির গৃহিনী। পেট পুরে খেতে পেয়ে খুউব খুশি হল সে। বাড়ির ছোট খোকন খেলতে বেরুচ্ছিল। গৃহিনী বলল, 'একটু দোয়া করে দেন ওকে।' সন্তুষ্ট ভিখারী খুব করে গায়ে মাথায় আশীর্বাদের হাত বুলিয়ে দিল খোকনের। আর মুখে বলল, 'অনেক দোয়া করি বাপ, বড় হয়ে জীবনে অনেক বড় কন্টেন্ট হও, বংশের মুখ উজ্জ্বল করো।' আশীর্বাদ ২০২৩ | তারেক নূরুল হাসান  (২৭/০৬/২০২৩)

সূর্যমুখীর এরোপ্লেন | ইন্দ্রাণী

Image
  এই বইটার আমার কাছে আসবার কোনো কথা ছিল না। তবু যে এটা পথ খুঁজে নিয়ে ঠিকই আমার কাছে পৌঁছে গেল, তার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারন রয়েছে। সেটা কী হতে পারে, তা জানতেই হয়ত আজ বইটা হাতে তুলে নেয়া হল। আর তারপরেই সূর্যমুখীর এরোপ্লেন আমাকে একটা ভীষণ টার্বুলেন্সের মধ্য দিয়ে উড়িয়ে নিয়ে চলল যেন। বিগত অনেকগুলি বছর ধরে ইন্দ্রাণীদির লেখা অনিয়মিতভাবে পড়া হয়েছে অনলাইনে। কিন্তু দুই মলাটের ভেতরে এক সাথে এতগুলো গল্পসহ এই বইটা যেন একটা ঘুমিয়ে থাকা বোমা। গল্পগুলোর ভেতরে অনেক চিন্তার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। বোঝা যায়, এলেবেলে করে এগুলো লেখা হয়নি, বরং সময় নিয়ে, যত্ন নিয়ে এদের পরিচর্যা করা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার যে ধরনের গল্প সবচেয়ে পছন্দের, এগুলো একদম সেই টেক্সটবুক থেকে উঠে এসেছে যেন। গল্প যেন নয় শুধু, পাতার পর পাতা জুড়ে যেন ছবি বসানো হয়েছে পর পর। অথবা যেন একটা ছবিরই বই এটা, সব ছবি মিলে গল্প হয়ে গেছে হঠাৎ করে। লেখা দিয়ে ছবি আঁকা সহজ কাজ নয়। কিন্তু এত সাবলীলভাবে সেটা এ বইয়ে করা হয়েছে, মনে হবে এর চেয়ে সহজ কিছু নেই বোধহয় আর। ইন্দ্রাণী যেন নিজের গল্পের সেই কালো টুপি পরা ম্যাজিশিয়ান। শব্দের ওপর, ভাষার ওপর, চরিত্রের ও

মহাশূন্যের গন্ধ নাকি পোড়া মাংসের মত | মিনহাজ রহমান

Image
চমৎকার একটা থ্রিলার পড়ে ফেললাম। লেখক মিনহাজ রহমানের খোঁজ পেয়েছি অনেক বছর হয়ে গেল। বাংলা ইবুক প্রকাশের চেষ্টায় আমি একটা সাইট খুলেছিলাম, নাম ছিল বইদ্বীপ প্রকাশনী। আমার নিজস্ব খামতিসহ আরও বিভিন্ন কারণে এই প্রকল্প নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তবে সে সময়কার কিছু সম্পর্ক এখনও টিকে আছে। মিনহাজ রহমানের একটা বই প্রকাশিত হয়েছিল বইদ্বীপ থেকে। নাম- চন্দ্রগ্রস্ত। সেটা ছিল একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। এই বইটাকেও সেই দলে ফেলা যায় বোধহয়। তবে থ্রিলার হলেও এই উপন্যাসের ভাষা বেশ উইটি। প্রচুর ইমেজারি ব্যবহার করেছেন লেখক। আর অনেক ক্লু ছড়িয়ে রাখা বই জুড়ে। যেগুলো মজা নষ্ট করেনি, বরং বই শেষ করে ক্লুগুলির কথা মনে করিয়ে বই পড়ার আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। আনরিলায়েবল ন্যারেটর এর একটা চমৎকার উদাহরণ হয়ে থাকবে এ বইটা আমার কাছে। এই টেকনিকটা খুব ঝামেলাপূর্ণ, খানিক এদিক ওদিক হলে গল্পের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও মিনহাজ রহমানের পরিমিতিবোধ ঈর্ষণীয়। চরিত্রগুলি বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আলাপগুলিও অবান্তর মনে হয়নি। বইটি প্রকাশ করেছে দ্বিমত প্রকাশনী। ওদের আর কোনো বই আগে হাতে আসেনি আমার। এই বইয়ের প্রোডাকশন

সত্যজিতের শতবর্ষ একশোয় ১০০ | হিল্লোল দত্ত

Image
এবারে দেশ থেকে নিয়ে আসা আরেকটা বই, সত্যজিৎকে নিয়ে একশটা তথ্যের সংকলন এটা। যেমনটা আশা করেছিলাম, বেশ অনেকগুলি অজানা তথ্য জানতে পেরেছি পড়ে। যেমন জন্মের পরপর সত্যজিতের নাম আসলে কী রাখা হয়েছিল, অথবা তাঁর সিনেমার সাথে সম্পর্কিত কয়েকজন মানুষের কিছু গল্প। অনেক ঘটনাকে সূত্র মিলিয়ে এক জায়গায় আনায় সেগুলোর ভেতরের মিল-অমিল নতুন করে চোখে পড়েছে। লেখক যে বেশ খেটেছেন এই বই লিখতে গিয়ে সেটা স্পষ্ট, আগে জানা কথাগুলিও তাই আড্ডার মেজাজে আবার পড়তে গিয়ে মন্দ লাগেনি। একটা স্পেশাল ধন্যবাদ লেখককে। হিন্দি জ্ঞানে বেশ টানাটানি আছে আমার, তাই 'তেরে বিনা জিন্দেগি সে কোই শিকওয়া তো নেহি' এই কথাটার মানে এতদিন ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারিনি। এই বইয়ের কল্যাণে সেটা জানা হলো। বইয়ের বাঁধাই চমৎকার। শক্তপোক্ত। ভাল লেগেছে। একটা ব্যাপার মনে হলো অবশ্য। প্রায় একশটি চ্যাপ্টার এই বইয়ে। সবগুলো নতুন পৃষ্ঠায় শুরু না করে যদি খানিক ফাঁকা রেখে পর পর ছাপা হতো, আমার ধারণা বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩০/৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনা যেত। সে ক্ষেত্রে দামও কম রাখা যেত হয়ত। প্রকাশক এ কথাটা ভেবে দেখতে পারেন। আর, কেন যেন বইয়ের ছবিগুলো সব নেগেটিভ প্রিন্ট এসেছে। এই ভ