Posts

Showing posts from January, 2023

ইন আদার ওয়ার্ডস | ঝুম্পা লাহিড়ী

Image
ঝুম্পা লাহিড়ীর লেখা 'ইন আদার ওয়ার্ডস' খুব ইন্টারেস্টিং একটা বই। কারণ একটা না, বরং বেশ কয়েকটা। যেমন, এই বইটি ঝুম্পা লিখেছেন ইটালিয়ানে। ইংরেজিতে নয়। আমি যে বইটি পড়েছি, সেটা ইটালিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন অ্যান গোল্ডস্টাইন। বইয়ের ভূমিকায় ঝুম্পা বলেছেন, অনুবাদের কাজটা তিনি নিজে না করে ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গেছেন। কারণ নিজেই অনুবাদ করলে তাঁর হয়ত মনে হতো, মূল ইটালিয়ানের সীমাবদ্ধতাকে ইংরেজি অনুবাদে শুধরে ফেলা যাক। কিন্তু তিনি সেটা করতে চাননি। হঠাৎ ইংরেজি ছেড়ে ইটালিয়ানে কেন লেখা শুরু করলেন তিনি, বিশেষ করে যখন এই ভাষায় তিনি পুলিৎজার বিজয়ী একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক, তার ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন নানা জায়গায়। অভিবাসী পরিবারের সন্তান তিনি। ঘরের ভেতর বাংলা, আর বাইরে ইংরেজি চলত। নিজের দেশ আসলে কোলকাতা, ব্রিটেন নাকি আমেরিকা, এই দোলাচলের মাঝখানে থাকতে থাকতে হঠাৎ করেই একবার ইটালি ভ্রমণে গিয়ে তিনি ইটালি দেশটার, এবং এর ভাষার প্রেমে পড়ে যান। এবং সিদ্ধান্ত নেন, এতদিন নিজের দেশ বা ভাষা বলে মেনে নিতে হচ্ছে যেগুলোকে, সেসব বাদ দিয়ে তিনি সম্পূর্ণ নতুন এক ভাষাকে নিজের আপন করে নিবেন। তাই পরিবারসহ বসত গুটিয়ে চলে যান ইটালিত

আমার ইলিয়াস | হাসান আজিজুল হক

Image
  এই বইয়ের কম্বিনেশান এতই লোভনীয় যে বই দোকানের তাকে দেখামাত্রই কেনা হয়ে গেল। প্রিয় লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে নিয়ে লিখেছেন আরেকজন পছন্দের লেখক হাসান আজিজুল হক। হাসানের লেখা কয়েকটি প্রবন্ধ আর সাক্ষাৎকারের সংকলন এটা। সম্পাদনা করেছেন চন্দন আনোয়ার। এরকম সংকলনের একটা দুর্বলতা হচ্ছে, বিভিন্ন সময়ে লেখা বা বলা বলে প্রচুর পুনরাবৃত্তি থাকে। প্রসঙ্গের, বক্তব্যের। পাঠক হিসেবে তাই মাঝে মাঝে মনোযোগ হারাতে হয়। তবে এটা এড়ানোর উপায় নেই খুব একটা। বিশেষ করে এরকম ছোট আকারের বইয়ে। ইলিয়াস নিয়ে নতুন কী জানলাম? খুব বেশি কিছু না। তবে হাসানের স্পষ্ট ও সাবলীল বয়ানে ইলিয়াসকে নিয়ে পড়তে খুব ভাল লেগেছে। বিশেষ করে একটা ব্যাপার উল্লেখ করতে হয়। ইলিয়াসকে নিয়ে হাসান প্রথম লিখেছিলেন ইলিয়াসের প্রথম বই বের হবার পরেই। এটা জেনে ভাল লাগলো, নতুন একজন লেখকের প্রথম বই পড়ার পরে কতটা ভাল লাগায় এবং সম্ভাবনাময় মনে হওয়ায় তিনি সেটা করেছিলেন। আর সেই প্রবন্ধটাই পড়তে বেশি ভাল লেগেছে আমার। সেই লেখাটায় ইলিয়াসের গল্প নিয়ে অনেক কাঁটাছেড়া আছে। এই ব্যাপারটা আমার জন্যে নতুন, কারণ ইলিয়াসের সব লেখা পড়ে ফেলায় তিনি আমার কাছে পরিপূর্ণ একজন লেখক, একজ

দি লটারি অ্যান্ড আদার স্টোরিজ | শার্লি জ্যাকসন

Image
দি লটারি- সম্ভবত ছোটগল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গল্পগুলির একটি। নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনে এটা প্রথমবার ছাপা হবার পরে পাঠকেরা হেইট মেইলের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল, ম্যাগাজিনকে এবং লেখিকাকেও। প্রচুর পাঠক সাবস্ক্রিপশান ক্যানসেল করেছিল এর পরে। অনেকে ব্যাখ্যা চেয়ে দিনের পর দিন চিঠি লিখে গেছে, 'লেখিকা এই গল্প দিয়ে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন?' প্রথমবার এই গল্পটা যখন পড়ি এসব ইতিহাস না জেনেই পড়েছি। তাতে ভাল যেটা হয়েছিল, পড়ামাত্রই থমকে গিয়েছিলাম, মনে হচ্ছিল, এটা কী পড়লাম! বিভিন্ন গল্প বা উপন্যাস নিয়ে এরকম শোরগোল হওয়াটা অপ্রচলিত নয়, তবে সবগুলো যে সেসবের যোগ্য তা কিন্তু নয়। দি লটারি এই ক্ষেত্রে চমৎকার একটা ব্যাতিক্রম অবশ্যই। এক লাইনে বলতে গেলে, দি লটারি প্রথমবার পড়ার অভিজ্ঞতা অভাবনীয়। ঠিক যেন 'এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।' ছাব্বিশটা গল্প রয়েছে এই বইয়ে। প্রতিটা গল্প পড়ি আর খানিক্ষণ চুপ করে বসে ভাবি, শার্লি জ্যাকসনের মাথার ভেতরে উঁকি মেরে যদি দেখতে পারতাম! আমার আরেকটা খুব পছন্দের গল্প হচ্ছে চার্লস। কুইন্সল্যান্ডের গোল্ড কোস্টের থিম পার্কে গিয়ে ব্যাটম্যান নামে একটা রাইডে চড়েছিলাম।

সুরাইয়া | শিবব্রত বর্মন

Image
বানিয়ালুলু পড়ে শিবব্রত বর্মনের লেখা নিয়ে যে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, সুরাইয়া শেষ করে বলতে পারি, সেই আগ্রহ এখনও বজায় রয়েছে। গল্পগুলো এক কথায় অদ্ভুত। শিবব্রত বর্মনের নামের মলাটে এখানে খানিকটা মন দিয়ে খুঁজলে দেখা পাওয়া যাবে কয়েক চিমটি শার্লি জ্যাকসন, খানিকটা সত্যজিৎ আর কিছু কিছু হুমায়ুন আহমেদও বটে। আর হঠাৎই যেন উঁকি দিয়ে যায় অল্প অল্প ফ্ল্যানারি ও'কনর। এরা সকলেই আমার এত প্রিয় যে, শিবব্রত বর্মনও পছন্দের লেখকের তালিকায় ঢুকে গেছেন অবলীলায়। 'সুরাইয়া' গল্পটাই সবচেয়ে ভাল লেগেছে। দুয়েকটি গল্প ভালমতন বুঝতে পারিনি অবশ্য, রেফারেন্স বা কনটেক্সট জানা না থাকায় হতে পারে সেটা। আরও ভাল লেগেছে 'মরিবার হল তার সাধ'। আর 'চেইন ক্যাফে'।

তখন গল্পের তরে | রিফাত আনজুম পিয়া

Image
  নতুন বছরের শুরু হল রিফাত আনজুম পিয়া-র গল্পের বইটা দিয়ে। রিফাতের লেখা প্রথম পড়ি ক্যাডেট কলেজ ব্লগে। সেখানে অনেক লেখার ভিড়ে ওর গল্পগুলো আলাদা করে চোখে পড়েছিলো। প্রথম বই বের হচ্ছে খোঁজ পেতেই লিস্টে যোগ করে নিয়েছিলাম, আর এবারে দেশে গিয়ে বাতিঘর থেকে কেনা হয়ে গেল বইটা- তখন গল্পের তরে। সব মিলিয়ে ৭ টা গল্প বইয়ে। শুরুতে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা একটা ভূমিকাও রয়েছে। গল্পগুলো পড়তে ভাল লেগেছে। সমকালীন এবং গতিময়। এক বসায় শেষ করে ফেলেছি বইটা। ভাল লেগেছে লেখার অকপট ভঙ্গিটাও। তবে, গতির ব্যাপারটায় একটা মনোটোনাস ভাব ছিল। কোথাও কোথাও রাশ টেনে ধরে খানিকটা ধীরে চললে হয়ত আরও ভাল লাগত। রিফাতের নতুন গল্প পেলে আগ্রহ নিয়ে পড়ব অবশ্যই, এটুকু নিশ্চিন্তে বলা যায়।