Posts

Consider This | Chuck Palahniuk

Image
বইয়ের লেখক Chuck Palahniuk কে চিনতাম না। তবে তাঁর ঝুলির সবচেয়ে বিখ্যাত বইয়ের নাম Fight Club জানতে পেরে এই বইটা উল্টে পাল্টে দেখার ইচ্ছা হল।   লেখালেখির কলাকৌশল নিয়ে এ বই। তবে নির্দিষ্ট কোনো ফর্মুলা বা কার্যবিধি দেয়া নেই এটায়। বরং ছোট ছোট বিভিন্ন দিক নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা , উপলব্ধি আর পর্যবেক্ষণ বলে গেছেন লেখক।   পড়তে সহজ ও আগ্রহোদ্দীপক লেগেছে , টানা পড়ে শেষ করে ফেলা গেল।  তবে বারবার হয়ত পড়া হবে না। 

ঊনগল্প | বিবর্তন

Image
মানুষ বেঁচে থাকলে বদলায়, আর মরে গেলে স্ক্রিনশট হয়ে যায়।

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

Image
  কুইন্সটাউন এয়ারপোর্টের ওয়েটিং লাউঞ্জে কয়েকটা খাবার দোকানের পাশে একটা বইয়ের দোকানও আছে। ফ্লাইটের জন্যে অপেক্ষা করার ফাঁকে সেখানে ঢুকে প্রথম কয়েকটা পাতা উল্টেই এই বইটা বেশ ভাল লেগে গেল। এরকম মোটা নিবের কালি-কলমের লুজ স্ট্রোকে আঁকা আর জলরং এর ওয়াশ দেয়া ইলাসট্রেশন আমার খুব ভাল লাগে। অনেকটা মোটা তুলির টানের মত। বইয়ের গল্পটাও বেশ। অবশ্য নির্দিষ্ট কোনো গল্প আছে এখানে, সেরকমটা বলা যাবে না। বরং এখানে একটা ভ্রমণের গল্প বলা। আর সেই ভ্রমণের বাঁকে বাঁকে দারুণ সব আত্মোপলব্ধি জুড়ে দেয়া। "আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে কোনো ঘটনায় আমরা কী প্রতিক্রিয়া দেখাব সেই স্বাধীনতা থাকা।" এই কথাটা, এবং এরকম আরও কয়েকটা কথা খুব সুন্দর করে বলা এখানে। কেমন স্বস্তি দেয় মনে, এক ধরনের অ্যাফার্মেশনের মত। বুড়ো হয়ে গেছি বলেই হয়ত এখন আর উপদেশ-ঘেঁষা কথা খুব বেশি উপভোগ করতে পারিনা। তবে এই বইটা পড়ে যেতে বেশ শান্তি লাগলো। সব মানুষই হয়ত কোনো না কোনো ভাবে একটা বোধিবৃক্ষের খোঁজ করে মনে মনে।

ঊনগল্প | আশীর্বাদ ২০২৩ | তারেক নূরুল হাসান

Image
  অনাহারে চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে দেখতে পেয়ে ভিক্ষা চাইতে আসা মানুষটাকে দরজার পাশে বসিয়ে বেশ খানিকটা ডাল-ভাত খেতে দিল বাড়ির গৃহিনী। পেট পুরে খেতে পেয়ে খুউব খুশি হল সে। বাড়ির ছোট খোকন খেলতে বেরুচ্ছিল। গৃহিনী বলল, 'একটু দোয়া করে দেন ওকে।' সন্তুষ্ট ভিখারী খুব করে গায়ে মাথায় আশীর্বাদের হাত বুলিয়ে দিল খোকনের। আর মুখে বলল, 'অনেক দোয়া করি বাপ, বড় হয়ে জীবনে অনেক বড় কন্টেন্ট হও, বংশের মুখ উজ্জ্বল করো।' আশীর্বাদ ২০২৩ | তারেক নূরুল হাসান  (২৭/০৬/২০২৩)

সূর্যমুখীর এরোপ্লেন | ইন্দ্রাণী

Image
  এই বইটার আমার কাছে আসবার কোনো কথা ছিল না। তবু যে এটা পথ খুঁজে নিয়ে ঠিকই আমার কাছে পৌঁছে গেল, তার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারন রয়েছে। সেটা কী হতে পারে, তা জানতেই হয়ত আজ বইটা হাতে তুলে নেয়া হল। আর তারপরেই সূর্যমুখীর এরোপ্লেন আমাকে একটা ভীষণ টার্বুলেন্সের মধ্য দিয়ে উড়িয়ে নিয়ে চলল যেন। বিগত অনেকগুলি বছর ধরে ইন্দ্রাণীদির লেখা অনিয়মিতভাবে পড়া হয়েছে অনলাইনে। কিন্তু দুই মলাটের ভেতরে এক সাথে এতগুলো গল্পসহ এই বইটা যেন একটা ঘুমিয়ে থাকা বোমা। গল্পগুলোর ভেতরে অনেক চিন্তার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। বোঝা যায়, এলেবেলে করে এগুলো লেখা হয়নি, বরং সময় নিয়ে, যত্ন নিয়ে এদের পরিচর্যা করা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার যে ধরনের গল্প সবচেয়ে পছন্দের, এগুলো একদম সেই টেক্সটবুক থেকে উঠে এসেছে যেন। গল্প যেন নয় শুধু, পাতার পর পাতা জুড়ে যেন ছবি বসানো হয়েছে পর পর। অথবা যেন একটা ছবিরই বই এটা, সব ছবি মিলে গল্প হয়ে গেছে হঠাৎ করে। লেখা দিয়ে ছবি আঁকা সহজ কাজ নয়। কিন্তু এত সাবলীলভাবে সেটা এ বইয়ে করা হয়েছে, মনে হবে এর চেয়ে সহজ কিছু নেই বোধহয় আর। ইন্দ্রাণী যেন নিজের গল্পের সেই কালো টুপি পরা ম্যাজিশিয়ান। শব্দের ওপর, ভাষার ওপর, চরিত্রের ও

মহাশূন্যের গন্ধ নাকি পোড়া মাংসের মত | মিনহাজ রহমান

Image
চমৎকার একটা থ্রিলার পড়ে ফেললাম। লেখক মিনহাজ রহমানের খোঁজ পেয়েছি অনেক বছর হয়ে গেল। বাংলা ইবুক প্রকাশের চেষ্টায় আমি একটা সাইট খুলেছিলাম, নাম ছিল বইদ্বীপ প্রকাশনী। আমার নিজস্ব খামতিসহ আরও বিভিন্ন কারণে এই প্রকল্প নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তবে সে সময়কার কিছু সম্পর্ক এখনও টিকে আছে। মিনহাজ রহমানের একটা বই প্রকাশিত হয়েছিল বইদ্বীপ থেকে। নাম- চন্দ্রগ্রস্ত। সেটা ছিল একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। এই বইটাকেও সেই দলে ফেলা যায় বোধহয়। তবে থ্রিলার হলেও এই উপন্যাসের ভাষা বেশ উইটি। প্রচুর ইমেজারি ব্যবহার করেছেন লেখক। আর অনেক ক্লু ছড়িয়ে রাখা বই জুড়ে। যেগুলো মজা নষ্ট করেনি, বরং বই শেষ করে ক্লুগুলির কথা মনে করিয়ে বই পড়ার আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। আনরিলায়েবল ন্যারেটর এর একটা চমৎকার উদাহরণ হয়ে থাকবে এ বইটা আমার কাছে। এই টেকনিকটা খুব ঝামেলাপূর্ণ, খানিক এদিক ওদিক হলে গল্পের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও মিনহাজ রহমানের পরিমিতিবোধ ঈর্ষণীয়। চরিত্রগুলি বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আলাপগুলিও অবান্তর মনে হয়নি। বইটি প্রকাশ করেছে দ্বিমত প্রকাশনী। ওদের আর কোনো বই আগে হাতে আসেনি আমার। এই বইয়ের প্রোডাকশন

সত্যজিতের শতবর্ষ একশোয় ১০০ | হিল্লোল দত্ত

Image
এবারে দেশ থেকে নিয়ে আসা আরেকটা বই, সত্যজিৎকে নিয়ে একশটা তথ্যের সংকলন এটা। যেমনটা আশা করেছিলাম, বেশ অনেকগুলি অজানা তথ্য জানতে পেরেছি পড়ে। যেমন জন্মের পরপর সত্যজিতের নাম আসলে কী রাখা হয়েছিল, অথবা তাঁর সিনেমার সাথে সম্পর্কিত কয়েকজন মানুষের কিছু গল্প। অনেক ঘটনাকে সূত্র মিলিয়ে এক জায়গায় আনায় সেগুলোর ভেতরের মিল-অমিল নতুন করে চোখে পড়েছে। লেখক যে বেশ খেটেছেন এই বই লিখতে গিয়ে সেটা স্পষ্ট, আগে জানা কথাগুলিও তাই আড্ডার মেজাজে আবার পড়তে গিয়ে মন্দ লাগেনি। একটা স্পেশাল ধন্যবাদ লেখককে। হিন্দি জ্ঞানে বেশ টানাটানি আছে আমার, তাই 'তেরে বিনা জিন্দেগি সে কোই শিকওয়া তো নেহি' এই কথাটার মানে এতদিন ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারিনি। এই বইয়ের কল্যাণে সেটা জানা হলো। বইয়ের বাঁধাই চমৎকার। শক্তপোক্ত। ভাল লেগেছে। একটা ব্যাপার মনে হলো অবশ্য। প্রায় একশটি চ্যাপ্টার এই বইয়ে। সবগুলো নতুন পৃষ্ঠায় শুরু না করে যদি খানিক ফাঁকা রেখে পর পর ছাপা হতো, আমার ধারণা বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩০/৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনা যেত। সে ক্ষেত্রে দামও কম রাখা যেত হয়ত। প্রকাশক এ কথাটা ভেবে দেখতে পারেন। আর, কেন যেন বইয়ের ছবিগুলো সব নেগেটিভ প্রিন্ট এসেছে। এই ভ

জীবন স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Image
 এখনো পড়া শেষ হয়নি। শীতের সকালের অল্প স্বল্প রোদ পোহানোর মত করে প্রতিদিন দু তিন পাতা করে পড়ে যাচ্ছি। বিশ্বভারতী থেকে বের হওয়া গেরুয়া প্রচ্ছদের বই, ঝকঝকে ছাপা, ছিমছাম সাইজ। চোখেরও আরাম, আবার হাতে নিয়েও আরাম।  এই শতবর্ষী বই পড়তে পড়তেও মাঝে মাঝে যখন উচ্চৈস্বরে হেসে উঠতে হচ্ছে, নিজেই চমকে যাচ্ছি। পৃথিবীর সব সৃজনশীল মানুষই সবচেয়ে বেশি যে সংশয়ে ভোগে, তা হচ্ছে প্রাসঙ্গিকতা। সময়ের সাথে সাথে আর 'রিলেটেবল' না থাকতে পারার ভয়। রবীন্দ্রনাথ এসবকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন আসলে!  আজ পড়তে গিয়ে দেখি এক জায়গায় ছেলেবেলায় স্কুলে অর্থ না বুঝে কোরাসে শেখা একটা গানের কথা লিখেছেন। অর্থ না জানায় শুধু শব্দগুলো শুনতে কেমন লিখেছেন তিনি। 'কলোকি পুলোকি সিংগিল মেলালিং মেলালিং মেলালিং।'  পরে অনেক ভেবে খানিক পাঠোদ্ধার করতে পেরেছেন তিনি, Full of glee, singing merrily, merrily, merrily.  তবে, প্রথম শব্দ 'কলোকি' আসলে কী সেটা তিনিও বের করতে পারেননি।  এইটুকু পড়ে মনে হলো, এমনকি জমিদার রবীন্দ্রনাথের যা ছিল না, সামান্য প্রজা আমার সেটা আছে। তা হচ্ছে, গুগল। 🙂  পরের শব্দগুলো গুগল করত

অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প | সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

Image
  সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম অদ্ভুত গল্প লেখেন। সবগুলো গল্পেই কথক হিসেবে তিনি নিজেই উপস্থিত। সব কয়টি গল্পই উত্তম পুরুষে লেখা। সেখানে গল্পের কথকের পেশা অধ্যাপনা, যিনি আবার লেখালেখিও করেন। কোনো কোনো গল্পে তাঁকে কেউ 'মনজুর' বলেও ডাকে। ইন্টারেস্টিং! সব গল্পেই তিনি পাঠককেও টেনে নেন, এবং মাঝে মাঝে পাঠককে ডেকে সম্বোধনও করেন। পাঠকের সাথে আলাপ করতে করতেও এগিয়েছে কিছু কিছু গল্প। তবে গল্পে নিজে উপস্থিত থাকলেও গল্পের কথকের খুনী হয়ে যেতে কোনো বাধা নেই। আবার কখনো কখনো কথকের উপর রাগ বা বিরক্তি তৈরিও থেমে থাকে না। এ দিক দিয়ে লেখক সত্যিই উদার। উন্নত মানের গল্পের বেসিক নিয়ম হচ্ছে, Show, don’t tell; এটা ওনার গল্পে একেবারেই খাটে না। অনেক বেশি টেলিং এখানে, শোয়িং এর বদলে। কিন্তু তাতে করে গল্প জমে যেতে আটকাচ্ছে না একদম। বরং সব গল্পই শুরু করে শেষ না করা পর্যন্ত থামা যাচ্ছে না। তার মানে কী দাঁড়ালো? তার মানে হলো এই যে, লিখতে জানলে গল্প যে কোনোভাবেই বলা যায়। নিয়ম কানুনের নিকুচি করলেও সমস্যা নেই কোথাও। পুরো বইটা পড়ে মনে হলো, যদি গল্পের ভেতরকার রহস্যময় এবং আধিভৌতিক উপাদানগুলো না থাকতো, এ গল্পগুলোকে অনায়াসে লেখকের

ইন আদার ওয়ার্ডস | ঝুম্পা লাহিড়ী

Image
ঝুম্পা লাহিড়ীর লেখা 'ইন আদার ওয়ার্ডস' খুব ইন্টারেস্টিং একটা বই। কারণ একটা না, বরং বেশ কয়েকটা। যেমন, এই বইটি ঝুম্পা লিখেছেন ইটালিয়ানে। ইংরেজিতে নয়। আমি যে বইটি পড়েছি, সেটা ইটালিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন অ্যান গোল্ডস্টাইন। বইয়ের ভূমিকায় ঝুম্পা বলেছেন, অনুবাদের কাজটা তিনি নিজে না করে ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গেছেন। কারণ নিজেই অনুবাদ করলে তাঁর হয়ত মনে হতো, মূল ইটালিয়ানের সীমাবদ্ধতাকে ইংরেজি অনুবাদে শুধরে ফেলা যাক। কিন্তু তিনি সেটা করতে চাননি। হঠাৎ ইংরেজি ছেড়ে ইটালিয়ানে কেন লেখা শুরু করলেন তিনি, বিশেষ করে যখন এই ভাষায় তিনি পুলিৎজার বিজয়ী একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক, তার ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন নানা জায়গায়। অভিবাসী পরিবারের সন্তান তিনি। ঘরের ভেতর বাংলা, আর বাইরে ইংরেজি চলত। নিজের দেশ আসলে কোলকাতা, ব্রিটেন নাকি আমেরিকা, এই দোলাচলের মাঝখানে থাকতে থাকতে হঠাৎ করেই একবার ইটালি ভ্রমণে গিয়ে তিনি ইটালি দেশটার, এবং এর ভাষার প্রেমে পড়ে যান। এবং সিদ্ধান্ত নেন, এতদিন নিজের দেশ বা ভাষা বলে মেনে নিতে হচ্ছে যেগুলোকে, সেসব বাদ দিয়ে তিনি সম্পূর্ণ নতুন এক ভাষাকে নিজের আপন করে নিবেন। তাই পরিবারসহ বসত গুটিয়ে চলে যান ইটালিত