রত্নভান্ডার-

এটাকে রত্নভান্ডার ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না।
আজ সকালে ইউনি যাবার সময় স্টেশন থেকে বের হতেই একজন হাতে একটা লিফলেট ধরিয়ে দিল। নিতান্ত অনাগ্রহে নিলাম সেটা, সবসময় যেটা করি। তাকিয়ে দেখি একটা বইয়ের দোকানের বিজ্ঞাপন। যে কোন বইয়ে আজ ওরা ২০% ডিসকাউন্ট দিচ্ছে।
ক্লাশ শেষে তাই সেই দোকান খুঁজতে বের হলাম। জায়গামত যাবার আগেই পরিচিত আরেকটা বইয়ের দোকান দেখে অলসতায় পেয়ে বসলো, ঢুকে গেলাম সেটাতেই।
হাজার হাজার বই সেখানে, কিন্তু সবগুলোরই ভীষন দাম। এ দেশে এসে এই দামের কারনেই বই কেনার অভ্যাসটা একেবারেই চলে গেছে। প্রতিবারের মতই তাই বইয়ের গন্ধ নিয়েই সময় কাটাচ্ছিলাম। হাত দিয়ে ছুয়ে ছুয়ে দেখছিলাম।
চট করে আর্ট এন্ড কালচার সেকশনে গিয়ে দেখি এই বই! লিওনার্দো দা ভিন্সি- দি কমপ্লিট ওয়ার্কস! সাংঘাতিক ব্যাপার! যেন এক সিডিতে সমগ্র রবীন্দ্রনাথ!
হাতে নিয়ে পাতা ওল্টালাম। ছোট ছোট নোটসহ লিওনার্দো-র আঁকা সবগুলা পেইন্টিং আর ড্রয়িং! মাথা খারাপ হবার জোগাঢ়! অবধারিতভাবে একদম শেষে গিয়ে দামটাও দেখে নিলাম। ত্রিশ ডলার! এখানে এসে সবাই ডলারের সাথে ৫০ দিয়ে গুণ দেয়। তারপরে ভিরমি খায়।
এই অভ্যাসটা সাউথ আফ্রিকায়ই ফেলে এসেছি আমি। এখানে এসে ৫০ দিয়ে গুণ দেই না আর। আমি করি কি, এরকম কিছু খরুচে শখ মেটানোর আগে মনকে বোঝাই, কিনিস না বাপ, কিনিস না, কতগুলা টাকা!
তবু মন না বুঝলে, চোখ বুজে সেটাকে ১৯ দিয়ে ভাগ দেই। হুম, তারমানে এই বইটা কিনতে হলে আমাকে মিনিমাম দেড়ঘন্টা এক্সট্রা কাজ করতে হবে।
তাই সই।
৩০ ডলারের বিনিময়ে এরকম সলোমনের গুপ্তধন হারায় কোন বোকা!