আজিকে বাহিরে শুধু ক্রন্দন-


কদিন ধরেই এ শহরে তুমুল বৃষ্টি! দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণ ঝুম ঝুম ঝুম।
দেশে হলে এর মাঝেই দৌড়ে নেমে যেতাম ভিজতে। কিন্তু এখানে, আমার ভাল লাগে না। দু'একবার যে চেষ্টা করি নি তা নয়। কিন্তু, দেশে যেমন, আকাশ থেকে একগাদা দূষিত রাসায়নিকের সাথে সাথে ভালোবাসাও ঝরে পড়ে বৃষ্টি হয়ে, এখানে একেবারেই তা নয়। উলটো কেমন গা বাঁচিয়ে চলতে ইচ্ছে করে আমার বৃষ্টি দেখলেই।

কিন্তু, সম্ভবত আমি বাদে, মেলবোর্ণের সবাই খুবই খুশি। মাত্র ক'দিন আগেই পত্রিকায় দেখলাম, রিজার্ভয়ারে পানির পরিমাণ গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন সীমায় গিয়ে ঠেকেছে। কাঠা ফাটা রোদে কোন একটা চাষী জমির ছবি দিয়েছিলো তার সাথে, ঠিক যেন আশী বছরের কোন বুড়োর কুচকানো গালের চামড়া! দেখলেই শিউরে উঠতে হয়!
এ শহরের সবাই কিছুদিনের জন্যে তাই চাতক পাখীর সঙী হয়ে উঠেছিলো। সৌভাগ্যবান চাতক, এতগুলো মানুষের কল্যানে অবশেষে তারও অদৃষ্টে জল এলো!
এ কয়দিনের রিমঝিমের পরে আজকের পত্রিকায় তাই অন্যরকম ছবি! মাঠের মাঝে খেলছে ছোট্ট এক কৃষক কন্যা, তার বাবার সাথে। কি যে ভাল লাগলো দেখে!

মাঝের পাতায় আরেকটা ছোট্ট ছেলের ছবি ছাপা হয়েছে। রেইনকোট গায়ে হাসিমুখে খেলছে সে বৃষ্টিতে। প্রথম বৃষ্টি দেখে সে নাকি অবাক হয়ে তার মাকে জিজ্ঞেস করেছিলো-, ''মাম, হু টার্নড দ্য শাওয়ার অন? ''

এইটুকু পড়ে হেসে ফেলতেই এ বছরের বৃষ্টিকে আমারও ভালো লাগা শুরু হলো।

Popular posts from this blog

আরেকটিবার-

মধ্যাহ্নভোজ | উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ | রূপান্তরঃ তারেক নূরুল হাসান

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy