রঙীন 'একটি ফুলে দুইটি ভ্রমর'-


সোজা সাপ্টা কাহিনি। দুই নায়ক, এক নায়িকা। নায়কদের একজনের বাবা নিজে নিজে খুন হন, ঘটনাচক্রে সন্দেহ গিয়ে পড়ে মূল নায়কের উপর। এদিকে নায়ক নায়িকার মাঝখানে চলে আসে আরেক প্রায়-নায়িকা। আমাদের নায়ক লোকসম্মুখে চুমু খান সেই নবাগতা নায়িকাকে- তাও আবার অনেককাল আগে মূল নায়িকাকে যেই ইশটাইলে খান, ঠিক সেই ইশটাইলে। এই না দেখে নায়িকার অভিমান ভেঙে পড়ে। ওদিকে বাবার খুনী সন্দেহ করায় নায়কদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। কাহিনিতে চলে আসেন ভিলেন। সেই কিন্তু আবার ভালো মানুষ, পুরোপুরি ভিলেন না। মেয়ের চিকিৎসার খরচ তোলার জন্যে তিনি ভিলেনের রোল করছেন।
তো এইরকম গোলমালের মাঝখানে সিনেমার শেষপ্রান্ত হাজির হয়ে যায়। নায়িকাকে কিডন্যাপ করে ফেলে ভালো মানুষ-ভিলেন, আর সহযোগী ভিলেন। ওখানে তুমুল মারামারি, নিজেদের মধ্যকার ভুল বুঝাবুঝি ভেঙে দুই নায়ক 'বুকে বুক মিলিয়ে' যুদ্ধ করে ভিলেনদের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যায়ে ভিলেন ছুরি হাতে এগিয়ে আসে নায়ককে মারতে, আর বন্ধুকে বাঁচাতে সেই ছুরির সামনে পিঠ পেতে দেন অন্য নায়ক। লাভের মধ্যে লাভ- নায়িকার কোলে মাথা রেখে মৃত্যু হয় তাঁর। শেষমেষ নায়ক নায়িকার মিলন ঘটে। সিনেমারও শেষ হয়।
এতক্ষণের কাহিনি পড়ে যদি ভাবেন, এই সিনেমার নাম রঙীন একটি ফুলে দুইটি ভ্রমর, তবে পাঠক, আপনার দোষ দিব না। বিশ্বাস করুন- সিনেমার শুরুতে যদি স্ক্রীনে না দেখাতো, তারচেয়ে বড় কথা- সাথের টিকেটের গায়ে যদি স্পষ্টাক্ষরে লেখা না থাকতো- আমি বিশ্বাসই করতাম না এই মাত্র যেই ছবিটা দেখলাম, সেটার নাম- স্পাইডার ম্যান-থ্রি!
হায়, সেলুকাস! হলিউডের পরিচালকেরা যে ইদানীং মনোযোগ দিয়ে বাংলা সিনেমা দেখা শুরু করেছেন, সিনেমার শেষে ক্রেডিট ডিসপ্লেতে এই তথ্যটাও যোগ করা দরকার ছিলো।
যারা এখনো দেখেন নি, তারা বেঁচে গেছেন। আর যারা বাঁচতে পারেন নি,আসেন ভাইয়েরা, আমরা গলা ছাইড়া কান্দি! :-((

Popular posts from this blog

আরেকটিবার-

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

মধ্যাহ্নভোজ | উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ | রূপান্তরঃ তারেক নূরুল হাসান