Posts
Showing posts from 2025
শেকসপিয়র অ্যান্ড কোম্পানি | আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
- Get link
- X
- Other Apps

সেই সব দিনে আমার কাছে বই কেনার মত কোনো টাকা থাকত না। আমি তাই শেকসপিয়র অ্যান্ড কোম্পানির রেন্টাল লাইব্রেরি থেকে ভাড়া করে এনে বই পড়তাম। ১২ রু-ডে-ল'ওডিওন রাস্তায় ছিল এই বইয়ের দোকান আর লাইব্রেরিটা, সিলভিয়া বিচ সেটা চালাত। দোকানের জায়গাটা বেশ খোলামেলা, তাই ঠান্ডা বাতাসের আনাগোনা থাকলেও সেটা তবু ভরে থাকত মানুষের আনন্দ আর উষ্ণতায়। শীতকালে বড় একটা স্টোভ জ্বালিয়ে দেয়া হতো দোকানের সামনে, ভেতরে টেবল আর শেলফভর্তি অনেক বই সাজানো। নতুন বইগুলো রাখা হতো জানালার কাছে, আর দেয়াল জুড়ে লাগানো থাকত জীবিত এবং মৃত বিখ্যাত সব লেখকের ছবি। ছবিগুলো স্ন্যাপশটের মত দেখতে, মৃত লেখকদেরও সেগুলোয় বেশ জীবন্ত দেখাত। সিলভিয়াও ছিল জীবনীশক্তিতে ভরপুর একজন মানুষ। তার মুখের গঠন ছিল ধারালো; চোখগুলো বাদামী রঙের, ছোট্ট কোনো প্রাণীর চোখের মতই জ্বলজ্বলে, আর কমবয়েসী মেয়েদের মত ছটফটে। সিলভিয়ার মাথার ঢেউ খেলানো বাদামী চুল সুন্দর কপালটা থেকে টেনে এনে একেবারে মাথার পেছন পর্যন্ত শক্ত করে বাঁধা থাকত। আর মাথার পাশে কানের পেছন পর্যন্ত যত্ন করে কাটা ঘন চুল ছুঁয়ে থাকত তার ভেলভেট জ্যাকেটের বাদামী কলার। খুব সুন্দর আর সুগঠিত পা ছিল সিলভিয়ার...
টিকিটাকা | ওয়াসি আহমেদ
- Get link
- X
- Other Apps

এই বইয়ের লেখাগুলো বাংলা ব্লগের স্বর্ণযুগের আরামদায়ক পোস্টগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলো। তবে বেশিরভাগ লেখা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, ব্লগের তুলনায় তাই বেশ গোছানো তাদের পরিবেশনা। সবচেয়ে আগ্রহোদ্দীপক হচ্ছে লেখাগুলোর বিষয়বস্তু। উপন্যাস মরে যাচ্ছে কিনা, প্রকাশকের রিজেকশন লেটার, রবীন্দ্রনাথের গল্পের যেসব নায়কেরা হারিয়ে গিয়েছিল- এরকম সব বিষয় নিয়ে লেখক তার পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন। পরিচিত লেখকদের অজানা গল্প শুনলাম, আবার অপরিচিত অনেক লেখকের সাথে পরিচয়ও ঘটলো। আইওয়া ওয়ার্কশপে কাটানো দিনগুলোর স্মৃতিচারণ ভালো লেগেছে। বই বিষয়ক অনেক সাধারণ এবং অসাধারণ বিষয় নিয়ে ওয়াসি আহমেদের দেখার ভঙ্গিটা বেশ অভিনব মনে হয়েছে।
ফিরোজা জলের নদী | প্রহরী
- Get link
- X
- Other Apps

কবিরা সবাই যে সুন্দর করে পড়তেও পারবেন, এরকম নিশ্চয়তা নেই। প্রহরী সেদিক দিয়ে ব্যতিক্রম। তাঁর নিজের একটা আবৃত্তি দিয়েই প্রথম তাঁর কবিতার সাথে পরিচয় হয়েছিল, "যে সন্ধ্যায় তুমি চলে যাও"। তারপরে অনেক রাতেই ঘুমোবার সময় এই কবিতা ছেড়ে দিয়েছি ইউটিউবে, এরকম হয়েছে অন্তত হাজারবার। এবারে হাতে পেলাম তাঁর লেখা কবিতার বই - 'ফিরোজা জলের নদী'। মাত্র ৬৪ পৃষ্ঠার পাতলা ছিমছাম বইটা, কিন্তু ভেতরে ধরে রেখেছে ফোঁটা ফোঁটা করে জমিয়ে রাখা বেদনার অজস্র বিন্দু। অনেকটা মনোলগের মত করে লিখে যাওয়া কবিতাগুলো। কোনোটায় রয়েছে একটা খণ্ড দৃশ্য, আর কোনোটায় হয়ত একটা পূর্ণ উপলব্ধি। ভালোবাসা, দু:খ আর বিরহের সাথে কবিতায় এসেছে ফিলিস্তিন, এবং ইরফান খান। "তুমি ফিরে এসো, যেনো, আমি তোমার ধানসিঁড়ি নদী", এরকম আকুতি অথবা, "একটা রিকশা করে যাওয়া যায় অনেকটা দূর, এই ধরো, মোহাম্মদপুর থেকে শ্যামলী হয়ে মিরপুর", এরকম সরল অভিব্যক্তি ভরা পাতায় পাতায়। আর রয়েছে একটা দুর্দান্ত সুন্দর উৎসর্গের পাতা। পড়ে যেতে ভালো লেগেছে। এই সময়ের একজন কবি যাকে নিজস্ব নি:সঙ্গতায় মনে পড়বে, এরকম খুব বেশি নেই। প্রহরীকে ধন্যবাদ।
আজ ১২ ই মে ...
- Get link
- X
- Other Apps

প্রতিবছর ১২ মে এলে মালা-র কথা মনে পড়ে। এই দিনে অঞ্জন দত্তের জীবন থেকে চলে গিয়েছিল মালা। ১২ মে তারিখটা দেখার সাথে সাথেই নিজে নিজে গুনগুন করে উঠি গানটা। সাথে মনে পড়ে, আরও একটা জায়গার কথা। কুমিল্লার কোটবাড়িতে যেটার অবস্থান। পঞ্চাশ একরের মত জায়গা নিয়ে দেয়াল আর কাঁটাতার ঘেরা একটা এলাকা। ঠিক সিকি-শতাব্দী আগে সে জায়গা ছেড়ে চলে এসেছি, প্রথম কৈশোরের ছয়টি বছর সেখানে কাটিয়েছিলাম। মাঝের এতগুলো বছর যখনি সে-জায়গাটার কথা ভেবেছি, কোনও একটা নির্দিষ্ট অনুভূতিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি মনের অবস্থা। কখনও ভালোলাগার ছবিগুলো তুলে এনেছে স্মৃতি, কখনও মনে পড়েছে ছোট্ট শিশুমনের ওপরে অহেতুক চাপের বেদনার্ত সময়ের কথা। জীবনের বিভিন্ন সময়ে এসে রহস্যময় স্মৃতি কেন যেন আলো ফেলেছে ভিন্ন ভিন্ন ছবির ওপর। আনন্দ, বেদনা, মাধুর্য ও তিক্ততায় মেশানো অদ্ভুত একটা সময় সেটা, অদ্ভুত একটা জায়গা। এবছর ১২ মে তে কী ভেবে টেনে নিলাম শাহাদুজ্জামানের এই বইটা। খাকি চত্বরের খোয়ারি। বেশ কয়েকবছর আগেই কেনা, পড়া হয়ে উঠছিল না। কিন্তু পড়ে বেশ ভালো লাগল। অনেকদিন পরে যেন নিজস্ব স্মৃতির পুকুরে চট করে একটা ডুব দিয়ে এলাম। আমার মনে ...
কাগজের জার্নাল
- Get link
- X
- Other Apps

অনেকদিন পরে কাগজে লিখতে গিয়ে খেয়াল করলাম, লেখায় বাংলা-ইংরেজির মিশেল তেমন একটা হচ্ছে না, কথা বলতে গেলে যেটা এড়ানো খুব মুশকিল হয়। এর পেছনে কারণ কী হতে পারে? একটা কারণ সম্ভবত, লিখতে গিয়ে ভাবনার সময় বেশি পাচ্ছি, কথা বলার তুলনায়। তার মানে, কথা যদি আরেকটু ধীরে বলি, তাহলে কি এটা এড়ানো সম্ভব? চেষ্টা করে দেখতে হবে।
I have more souls than one | Fernanndo Pessoa
- Get link
- X
- Other Apps

সমুদ্রের বুকে বয়ে চলা নৌকারা নিজেকে ভাবে পাখি, আর পালগুলো যেন ডানার মতন। তাদের দেখে মনে পড়ে যায়, কী যেন একটা হবার কথা ছিল আমার, যা হতে পারিনি। সেই বেদনা আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়...। (আমি বুঝতে পারি, নিজেকে পাখি ভাবতে থাকা একটা বিষণ্ণ নৌকা আমি।) I See Boats Moving by Fernando Pessoa I see boats moving on the sea. Their sails, like wings of what I see, Bring me a vague inner desire to be Who I was without knowing what it was. So all recalls my home self, and, because It recalls that, what I am aches in me. Translated from Portugese by Johnathan Griffin.
এটা আমার দর্শনের নোটখাতা নয় | আরিফ রহমান
- Get link
- X
- Other Apps

আগ্রহ নিয়ে পড়া হল বইটা। ছোট করে বলতে গেলে, এখানে বলা হয়েছে আমাদের আরও সহমর্মী হবার কথা, ভিন্ন বিশ্বাসের (এবং মতের) মানুষদের ব্যাপারে সহনশীল হবার সদিচ্ছা থাকার কথা। মুখে এ কথাগুলো অনেকেই বলে থাকি, তবে নিজেদের কাজে তার প্রতিফলন আনা সহজ নয়। আর সহজ নয় বলেই একটা পুরো বই লিখে ফেলতে হল। ছাপার গন্ডগোলে মাঝের কয়েকটা পাতা ফাঁকা পেয়েছি, পরের সংস্করণে ঠিক হয়ে যাবে হয়ত। লেখকের ভাবনার গতিপথ, সুন্দর করে আলাপের ভঙ্গিতে বুঝিয়ে লেখার কারনে, অনুসরণ করে যাওয়া সহজ হয়েছে।
সুহান রিজওয়ান-এর জার্নাল
- Get link
- X
- Other Apps

দু হাজার পনের থেকে বিশ, এই ছয় বছরে লেখা সুহানের দিনলিপির বাছাইকৃত ভুক্তির সংকলন এই বই। ফেসবুক টুইটারের এই যুগে দিনলিপি লিখে রাখার মত মানুষ খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না; সুহান সেই বিরল মানুষদের একজন। ব্যক্তিগত জার্নাল হলেও লেখার গুণে, সেই সাথে, 'আমি' বা 'আমার' শব্দের বাহুল্য নেই বলে (যেটা আসলে লেখারই আরেক গুণ) এই বইটির বক্তব্য ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে গেছে, হয়ে দাঁড়িয়েছে সময়ের প্রতিচ্ছবি। প্রতিটা নতুন বছর শুরুর সাথে সাথে চোখ বুজে একবার ভাবার চেষ্টা করলাম, ওই সময়টায় কোথায় ছিলাম আমি। যেনবা দেশ থেকে বহুদূরে বসে যে শূন্যতা অনুভব করি প্রতিনিয়ত, পাজলের একটা টুকরোর মত এই বইটা যেন কিছুটা তা পূরণে সাহায্য করে আমায়। ভালো লাগার মত অংশ রয়েছে অনেক, দারুণ সব উক্তি, কোটেশন, বই বা লেখকের উল্লেখ, পেন্সিলে দাগিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছি। তবে, উপন্যাস তৈরির সময়টায়, তৈরি হতে থাকা উপন্যাসিকের অন্তরে যে টানা পোড়েন, এ অংশগুলোই মনে জায়গা করে নিয়েছে বেশি। All reacti
ছোটগল্প সমগ্র | মতি নন্দী
- Get link
- X
- Other Apps

মতি নন্দীর উপন্যাস পড়েছি আগে, ছোটগল্প পড়া ছিল না। প্রায় সত্তরটার মত গল্প রয়েছে এই বইয়ে। হাতে গোনা তিন চারটে বাদে বেশিরভাগই ভাল লেগেছে। এরকম হয় না সাধারণত। এমন সব মানুষের সাথে দেখা করিয়ে দিলেন মতি নন্দী, যাদের সাথে সাধারণত দেখা হয় না আমাদের। অবাক হয়েছি নিজের গণ্ডিবদ্ধ জীবনের কথা ভেবে। একটা গল্প কয়েকবার পড়া হল, 'শহরে আসা'। কী দারুণ গল্পটা! লেখায় কোথাও ভাষার মারপ্যাঁচ বড় একটা নেই। প্রতিটা গল্প যেন হাতে ধরা যায়, ছোঁয়া যায়, চেনা যায়।
অর্ধেক জানুয়ারি-
- Get link
- X
- Other Apps

লিলি-রোজ বিনতে জ্যাক স্প্যারো দারুণ অভিনয় করে। এতটা আশা করিনি। মতি নন্দী-র ছোট গল্পও, এতটা আশা করিনি। কে জানত এত ভাল গল্প লেখেন তিনি। কোনো অং বং চং নেই, গল্প বলছি বলে অহেতুক টালবাহানা নেই, সলিড সব গল্প একেবারে। সেগুলো পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তবু হেলাল হাফিজকে মনে পড়ল অনেকবার। বড় বেদনার মত বেজে গেলেন তিনি বুকে, বারবার, বারবার। 'পান্তাভাতে' পড়তে পড়তেও মনে হল একবার, গুলজার যদি চিনতেন হেলাল হাফিজকে, কত ভালই না হতো। পান্তাভাতে বইটায় নিজের নামে একটা চ্যাপ্টারের মালিক হয়ে যেতেন তিনি হয়ত। অথবা, যেমনটা ফিটজেরাল্ড বা এজরা পাউন্ড জায়গা পেয়েছেন হেমিংওয়ের প্যারিসের স্মৃতিতে। অবশ্য স্মৃতিতে জায়গা পেলেই বা কী আসে যায়। ইমতিয়ার শামীম চিরসত্যের মত তবু বলে যান, কোভিডে মরুক বা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে লাগা আগুনে, সেই মরাকে আরও একবার করে মারে চেনা জানা মানুষেরাই। মানুষ তাই বাঁচাবে মানুষকে, এতটুকুও হয়ত আশা করি না আর।
পান্তাভাতে । গুলজার
- Get link
- X
- Other Apps

গুলজারকে কত ভূমিকায়ই না দেখি। সবচেয়ে বেশি চেনা হলেন গীতিকার গুলজার। অথবা কবি। পান্তাভাতে পড়তে পড়তে পরিচালক আর চিত্রনাট্যকার গুলজারকেও জানা হলো ভালো করে। পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম নেওয়া গুলজারের বাংলা প্রীতি অসামান্য, এতটাই যে নিজেকে বাঙালী বলে পরিচয় দিতে দ্বিধা করেন না। তাঁর দীর্ঘ জীবনে সঙ্গী হওয়া আরও কিছু মানুষ, যাদের সবাই আমাদের চেনা, তাঁদের কথা উঠে এসেছে এই বইয়ের লেখাগুলোয়। বিমল রায়, সলীল চৌধুরী, কিশোর কুমার, সঞ্জীব কাপুর, শর্মিলা, ঋত্বিক ঘটক, রাহুল দেব বর্মন, মহাশ্বেতা দেবী, ভীমসেন যোশী, রবিশংকর, এরকম আরও অনেকে। টুকরো টুকরো স্মৃতির মত লেখাগুলো, কোনোটাকেই পূর্ণাঙ্গ বলা যাবে না হয়ত। বরং অনেকটা স্ন্যাপশটের মত। ছবির অ্যালবামের মতই, জমিয়ে রাখা যায়।