আর জনমে | লুনা রুশদী
সকালের অফিসগামী ট্রেনে বসে পড়া শুরু করলাম লুনা রুশদীর 'আর জনমে'। রেলগাড়ির মতই গতিময়, ঝরঝরে লেখা। ভাল লেগেছে পড়তে। কোথাও আটকালো না একদম। প্রথম দেখাতেই তাবাসসুমকে চেনা গেলো। মেলবোর্নের শহরের রাস্তায়, বিভিন্ন অফিসে, শান্ত-নিরিবিলি সাবার্বের বিভিন্ন বাড়িতে থাকেন এরকম মানুষেরা। লুনা রুশদীর সাবলীল বর্ণনায় খুব স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে তাদের গল্প। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংলাপগুলো বাস্তব লেগেছে, কথার পিঠে বলা তাদের কথাগুলো, উপভোগ্য।
ফিকশন-পাঠক হিশেবে একটাই অভিযোগ, বাস্তব জগতের অনেক বেশি রেফারেন্সের কারণে গল্পে ফিকশন কমে গেছে কিছু জায়গায়। বরং ডকু ফিকশন ধরনের ভাব এসেছে একটা সব মিলে।
কিছু কিছু অনুভূতির বর্ণনা খুব সুন্দর দিয়েছেন লেখক। অনেক দিনের প্রতিবেশীর বাড়ি ধীরে ধীরে নাই হয়ে যাওয়া, বা তৃষ্ণার্ত পাখিটার ভাঙা ঠোঁট, অথবা যেখানে লিখেছেন, মানুষের অস্তিত্বের বাতাস হয়ে যাওয়ার কথা, এগুলোর গভীরতা অনেক। চাচাত বোনেদের সাথে সম্পর্কের রসায়ন, চাচীর সাথেও, ছবির মত পরিষ্কার এসেছে। এই শহরের নানা জায়গার নাম, ট্রাম-বাস-ট্রেন, সব মিলে খুব চেনা পরিচিত লেগেছে বইটার সবকিছু।
বইয়ের ছবিটা আমার অফিসের জানালায় দাঁড়িয়ে তোলা। পেছনে দেখা যাচ্ছে ফ্লিন্ডার্স স্ট্রিট স্টেশনের আবছায়া অবয়ব। এই বইয়ের জন্যে এর চেয়ে ভাল কম্পোজিশন আর মাথায় এল না।