নাইন স্টোরিজ | জে ডি স্যালিঞ্জার
ফ্লু ভ্যাকসিনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কেমিস্ট শপে নিজের নাম লিখিয়ে মাঝের একটা আইলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। ফ্লু ভ্যাকসিন নামে নিরীহ শোনালেও আদতে তা নয়; প্রতিবারই আমাকে অন্তত দিন চারেক ভোগায়। খাল কেটে কুমির আনার মত, ভ্যাকসিন নিয়ে অবশ্যম্ভাবী জ্বর ডেকে আনি আমি।
অপেক্ষা করতে করতে ফার্মাসিস্টদের সন্দেহের চোখে দেখছি। আজ কার হাত দিয়ে এই দুর্যোগ ডেকে আনছি নিজের ওপরে, বোঝার চেষ্টা করছি।
কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য এই গুরুদায়িত্ব থেকে নিজেকে অব্যাহতি দিলাম। হাতে ছিল নাইন স্টোরিজ, মুখ ডুবিয়ে পড়া শুরু করে দিলাম সেটা। গভীর মনোযোগে পড়ছি, হঠাৎ খেয়াল করে দেখি ফার্মাসিস্ট এসে আমার ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি চোখ ছোট করে অবাক হয়ে তাকালাম। কী ব্যাপার?
ফার্মাসিস্ট হাসিমুখে জানালো, সে নাকি আমার নাম ধরে ডেকেছে কাউন্টার থেকে, আমি শুনতে পাইনি। আমার ভ্যাকসিন নেয়ার পালা এখন। আমরা উল্টো ঘুরে হাঁটা দিলাম। সে হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো, এটা কি সেই স্যালিঞ্জার, ক্যাচার ইন দ্য রাই?
আমার মুখ সাথে সাথে উজ্জ্বল হয়ে গেলো। হ্যাঁ হ্যাঁ, সে-ই। তুমি পড়েছ সেটা?
তারপরের কিছু সময় আমরা হোল্ডেন কফিল্ড, তার বোন, আর তার বন্ধুদের নিয়ে আলাপ করলাম। উৎসাহ কার বেশি, আলাপের তোড়ে সেটা বোঝা গেল না। মিনিট দশেক পরে আমার মনে হলো ভ্যাকসিন কেন, ফার্মাসিস্ট আমাকে এখন সার্জারির টেবলে তুলতে চাইলেও আমি আপত্তি করবো না!
নাইন স্টোরিজের গল্প নিয়েও কথা হলো। বলতে বলতেই আমি প্রথমবারের মত খেয়াল করলাম, স্যালিঞ্জারের গল্পে কমবয়সী চরিত্র অনেক, আর তারা খুব গুরুত্বও পায় প্লটে। ছোটদের মনস্তত্ত্ব বেশ ভাল ফুটিয়ে তোলেন স্যালিঞ্জার। যেমন ধরা যাক 'আ পারফেক্ট ডে ফর ব্যানানাফিশ', অথবা 'জাস্ট বিফোর দ্য ওয়ার উইদ দি এস্কিমোস' গল্পগুলো। আবার অনেক গল্পেই তিনি তাদের সারল্য ব্যবহার করে সামলাতে চেয়েছেন জগতের জটিল কোনো সমস্যা, যেমন 'ডাউন অ্যাট দ্য ডিঙ্গি' বা 'দ্য লাফিং ম্যান' গল্পগুলো।
যাই হোক, জ্বর তবু এসেছিলো, জে ডি স্যালিঞ্জারও সেটা আটকাতে পারেননি।
See less