Posts

Showing posts from June, 2024

আর জনমে | লুনা রুশদী

Image
  সকালের অফিসগামী ট্রেনে বসে পড়া শুরু করলাম লুনা রুশদীর 'আর জনমে'। রেলগাড়ির মতই গতিময়, ঝরঝরে লেখা। ভাল লেগেছে পড়তে। কোথাও আটকালো না একদম। প্রথম দেখাতেই তাবাসসুমকে চেনা গেলো। মেলবোর্নের শহরের রাস্তায়, বিভিন্ন অফিসে, শান্ত-নিরিবিলি সাবার্বের বিভিন্ন বাড়িতে থাকেন এরকম মানুষেরা। লুনা রুশদীর সাবলীল বর্ণনায় খুব স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে তাদের গল্প। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংলাপগুলো বাস্তব লেগেছে, কথার পিঠে বলা তাদের কথাগুলো, উপভোগ্য। ফিকশন-পাঠক হিশেবে একটাই অভিযোগ, বাস্তব জগতের অনেক বেশি রেফারেন্সের কারণে গল্পে ফিকশন কমে গেছে কিছু জায়গায়। বরং ডকু ফিকশন ধরনের ভাব এসেছে একটা সব মিলে। কিছু কিছু অনুভূতির বর্ণনা খুব সুন্দর দিয়েছেন লেখক। অনেক দিনের প্রতিবেশীর বাড়ি ধীরে ধীরে নাই হয়ে যাওয়া, বা তৃষ্ণার্ত পাখিটার ভাঙা ঠোঁট, অথবা যেখানে লিখেছেন, মানুষের অস্তিত্বের বাতাস হয়ে যাওয়ার কথা, এগুলোর গভীরতা অনেক। চাচাত বোনেদের সাথে সম্পর্কের রসায়ন, চাচীর সাথেও, ছবির মত পরিষ্কার এসেছে। এই শহরের নানা জায়গার নাম, ট্রাম-বাস-ট্রেন, সব মিলে খুব চেনা পরিচিত লেগেছে বইটার সবকিছু। বইয়ের ছবিটা আমার অফিসের জানালায় দাঁড়

সুনীল এবং কয়েকজন | স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়

Image
অনেক দেরিতে হলেও এ-বছর বইমেলায় অর্ডার করা বইয়ের কয়েকটি অবশেষে হাতে এসে পৌঁছেছে। আর সেগুলোর মধ্য থেকে সবার আগে পড়ে শেষ করলাম এই বইটি। 'সুনীল গাঙ্গুলীর দিস্তে দিস্তে লেখা'র সাথে পরিচয় থাকলে, তাঁর জীবনের অনেক কিছুই পাঠকের জানা থাকার কথা। তারপরেও খুব আগ্রহ নিয়ে বইটি পড়লাম। মিষ্টি কিছু স্মৃতিচারণ, কিছুটা এলোমেলো, এবং অনেকটা অসম্পূর্ণই বলা যায়। তবু ভালো লাগলো পড়ে যেতে, একটা ঘষা কাচের মধ্য দিয়ে যেন দেখে যাওয়া, সুনীল ও তাঁর আশেপাশের কিছু মানুষকে। তাঁদের প্রথম পরিচয়, সংসার শুরুর প্রথমদিকের দিনগুলো, নানা ভূমিকায় সুনীলের অবিরাম লেখা চালিয়ে যাওয়ার গল্প কিছুটা জানা গেলো স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রায় মৃদুভাষী কলমে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় ছাপা হয়েছিল বইয়ের লেখাগুলো, সেগুলোর তারিখ দেয়া থাকলে ভাল হতো। বইয়ের মাঝে অনেকগুলো দেখা না-দেখা ছবি ছাপা আছে, তবে সেগুলোর ক্যাপশন নেই। পুরো বইয়ের ছাপা ও বাঁধাইয়ের যত্নের সাথে, সম্পাদনার এই খামতিটুকু বেমানান। তবে একদম শেষে এসে লেখকের পুত্র শৌভিকের ছোট্ট লেখাটা অপ্রত্যাশিত ছিল, 'বাবা' সুনীলের টুকরো কিন্তু খুব আপন একটা ছবিও পাওয়া গেলো তাতে।

নাইন স্টোরিজ | জে ডি স্যালিঞ্জার

Image
ফ্লু ভ্যাকসিনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কেমিস্ট শপে নিজের নাম লিখিয়ে মাঝের একটা আইলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। ফ্লু ভ্যাকসিন নামে নিরীহ শোনালেও আদতে তা নয়; প্রতিবারই আমাকে অন্তত দিন চারেক ভোগায়। খাল কেটে কুমির আনার মত, ভ্যাকসিন নিয়ে অবশ্যম্ভাবী জ্বর ডেকে আনি আমি। অপেক্ষা করতে করতে ফার্মাসিস্টদের সন্দেহের চোখে দেখছি। আজ কার হাত দিয়ে এই দুর্যোগ ডেকে আনছি নিজের ওপরে, বোঝার চেষ্টা করছি। কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য এই গুরুদায়িত্ব থেকে নিজেকে অব্যাহতি দিলাম। হাতে ছিল নাইন স্টোরিজ, মুখ ডুবিয়ে পড়া শুরু করে দিলাম সেটা। গভীর মনোযোগে পড়ছি, হঠাৎ খেয়াল করে দেখি ফার্মাসিস্ট এসে আমার ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি চোখ ছোট করে অবাক হয়ে তাকালাম। কী ব্যাপার? ফার্মাসিস্ট হাসিমুখে জানালো, সে নাকি আমার নাম ধরে ডেকেছে কাউন্টার থেকে, আমি শুনতে পাইনি। আমার ভ্যাকসিন নেয়ার পালা এখন। আমরা উল্টো ঘুরে হাঁটা দিলাম। সে হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো, এটা কি সেই স্যালিঞ্জার, ক্যাচার ইন দ্য রাই? আমার মুখ সাথে সাথে উজ্জ্বল হয়ে গেলো। হ্যাঁ হ্যাঁ, সে-ই। তুমি পড়েছ সেটা? তারপরের কিছু সময় আমরা হোল্ডেন কফিল্ড, তার বোন, আর তার বন্ধুদের নিয়ে আলাপ করলাম। উৎসাহ কা