জীবন আমার বোন | মাহমুদুল হক
পড়া বই পুনর্পাঠের একটা আনন্দ আছে। চেনা দোকানে ঢুকে চা খাওয়ার মত আনন্দ। দোকানীর হাতের চায়ের স্বাদ আপনার জানা, তাই আয়েশ করে চায়ের কাপে চুমুক দিতে পারবেন, এই নিশ্চয়তা জেনেই আপনি সেখানে যাবেন। পড়া বই হাতে তুলে নেয়ার অনুভূতিটাও এরকমই।
মাথায় কোনো কারণে জট পাকিয়ে গেলেও পড়া বইয়ের দ্বারস্থ হওয়া ভাল, বহুদিনের অভিজ্ঞতা আমাকে তা-ই শিখিয়েছে।
এই সমস্ত বিবিধ কারণে আবার অনেক দিন বাদে পড়লাম মাহমুদুল হকের 'জীবন আমার বোন'।
তার বেশ কিছুদিন পরে মাহমুদুল হকের এক সাক্ষাৎকারে জানতে পারলাম, তাঁর বইয়ের নামের পেছনে অবদান আছে সেই বইটার।
মাহমুদুল হকের ভাষাকে ঠিক আটপৌরে বা সাবলীল বলা যায় না, তবে আমার ভাল লাগে।
এই বইটা মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগের কয়েকটা দিনের গল্প মূলত। কয়েকজন তরুণ তরুণী, এক বা কয়েকটি পরিবার। আর একটা বোন। সব তরুণের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সাহস ছিল না, সবার যুদ্ধে যাবার পেছনের কারণও এক ছিল না।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়া অন্য উপন্যাসগুলো যে ধাঁচের, এটা ঠিক সেরকম নয়। পড়ে আবারও ভাল লাগল।
লিখতে লিখতে পুনর্পাঠের আরেকটা দিক টের পেলাম। গল্প ছাড়িয়ে দৃষ্টি আরও তীক্ষ্ণ হয় পরের পাঠে, চোখের সীমানায় ধরা পড়ে আরও বেশি কিছু, প্রথমবারে যেগুলো হয়ত চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। মন্দ নয় ব্যাপারটা।