আব্বার সাথে রাশেদের আজ আশ্চর্য শত্রুতা। আজ সারাদিন, দিনমান। ছোট্ট চায়ের টেবলের দু'পাশে ওরা দু'জন ঠিক দুই যুযুধানের মতন দাবার গুটি নিয়ে বসে আছে সকাল থেকে। কখনও গালে হাত, কখনও বাঁকানো ভ্রু, কখনও চুপচাপ। আব্বার অফিস ছুটি আজ, রাশেদের ইশকুলও তাই। ওদের সারা ঘরে ছুটির আমেজ এলিয়ে আছে, বসার ঘর থেকে রান্নাঘর, সেখান থেকে বারান্দায়, সবখানে। আপাতত শুধু ছুটি নেই দুজনের মাথার ভেতর, তুমুল তান্ডব তাতে, যুদ্ধ পরিকল্পনায় ব্যস্ত, আর বাইরে তবু বেশ নিরাবেগ, অথবা ভঙ্গিটা সেরকমই, খাঁজ কাটা সুন্দর কাঠের সাদা কালো সৈন্যদের ওরা লেলিয়ে দেয় একে অপরের দিকে। একটা অদ্ভুত দৃশ্য যেন টুপ করে বসে পড়ে টেবলের চারপাশ ঘিরে, যেন ঢাল-তলোয়ার হাতে দুই সৈন্য, যুদ্ধের ময়দানে পরস্পরের মুখোমুখি। দাবা, আসলে বুদ্ধিরই খেলা, দু'জনের কেউই তাই হার মানতে রাজি নয়। কেউ কেউ জানে, কেউ জানে না, দাবার ছক কাটা বর্গাকার ঘরগুলোকে পেরিয়ে যেতেও বাস্তবিক, যোদ্ধাসুলভ একটা দক্ষতার খুব প্রয়োজন হয়। আব্বার সাদা গুটি হয়ত পেছন থেকে তাড়া করে আসতে থাকে রাশেদের কালোর দিকে, আর রাশেদ তখন তার অলক্ষ্যে কাগজের ময়দানের অন্য কোন পার্শ্বে হয়তো তার অন্য কোন ...