Posts

Showing posts from February, 2008

একুশের গল্পঃ বউ কথা কও

Image
'সবচেয়ে ভালো.../ পছন্দের/ শক্তিশালী...' এইরকম শর্ত দিয়ে কিছু বেছে নিতে বললে বিপদে পড়ে যাই। এই ব্যাপারগুলো সময়ের সাথে বারবার বদলে যায়। আজ এটা ভালো লাগলো, কাল হয়তো অন্যটা। তবু মাঝে মাঝে অল্প কিছু লেখা মনে খুব দাগ কেটে যায়। বদলে যাবার তালিকায় ওরা আর থাকে না তখন, বরং পাহাড়ের মতন অবিচল থেকে মনের ভেতর একটা জায়গা করে নেয়। একাত্তর নিয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী লেখা বেছে নিতে বললে আমি তাই চোখ বুজে আহমদ ছফা-র ওঙ্কার তুলে নিবো। তেমনি করে একুশ নিয়ে যদি বাছতে চাই- জহির রায়হানের একুশের গল্প থাকবে লিষ্টিতে, সাথে আরেকটা গল্প- টিটো রহমানের 'বউ কথা কও'। টিটো আমার জিগরি দোস্ত। একই ব্যাকগ্রাউন্ডের কলেজে পড়েছি আমরা, ও বরিশালে, আমি কুমিল্লায়। পরিচয় হয়েছে ঢাবি-তে এসে। ঢাবি-র ফিল্ম সোসাইটির জান-প্রাণ দেয়া সদস্য ও। প্রথম বর্ষে এসে ওর তালে পড়ে আমিও ঢুকে গেছি ওখানে। ভালই সময় কাটাতাম টিএসসি-র দোতলায় ফিল্ম সোসাইটির রুমটায়। বিশেষত জমত যখন কোন একটা চলচ্চিত্র উৎসব হতো, দিনরাত খাটুনি, এড জোগাড় করো, স্যুভেনির ছাপাতে ফকিরাপুলে মাহী ভাইয়ের প্রেসে দৌড়াও। এত সব কষ্টের পরে আনন্দে মন ভরে উঠত, যখন টিএসসির অন্ধকার

মন্তব্য-পোষ্টঃ বদরুদ্দীন উমরের কলাম পড়ার পরে-

জুবায়ের ভাইয়ের লিংক থেকে গিয়ে সমকালে ছাপা হওয়া জনাব উমরের লেখাটি পড়লাম। সোজা বাংলায় বললে বেশ আক্রমণাত্মক একটা লেখা, বিষয় এবং লেখার ভাষা- দু দিক থেকেই। পড়া শেষ করে কিছু ব্যাপারে কনফিউশান রয়ে গেছে। যেমন, উমর বললেন, ৫২ থেকে ৭১ পর্যন্ত কোন স্মৃতিচারণ করা হয় নি, কারণ ব্যাক্তিগত প্রচার কেউ চাইতেন না। স্মৃতিচারণ না করাটা সাধুবাদের যোগ্য কি না এই নিয়ে আমি খানিকটা দ্বিধায় আছি। এবং আন্দোলনের পরের বছর থেকেই এই নিয়ে 'বিরাট কিছু করে ফেলেছি' জাতীয় মনোভাব আসাটাও বাস্তবসম্মত নয়। আমার ধারণা, এরকম বড় ঘটনাগুলোর মুল মর্ম ঠিকঠাক উপলব্ধিতে আসে অনেকটুকু সময় পেরিয়ে গিয়ে যখন পেছনে ফিরে তাকানো হয়, তখন। তার আগে খুব নিকট সময়ে হয়তো ভালো মতন আলো ফেলাটা দুরুহ হয়ে ওঠে। সে সময়ের ফেব্রুয়ারির সাথে এ সময়ের ফেব্রুয়ারির পার্থক্যের জন্যে ওনার খারাপ লাগাটা বুঝতে পারি, কিন্তু এটাও কি বাস্তবসম্মত নয়? তখন আর এখনকার পরিপ্রেক্ষিত কি মানুষের কাছ থেকে একই আচরণ দাবী করে? সেই সময় আমাদের নিজের একটা দেশ ছিল না, নিজেদের মৌলিক অধিকারগুলোও বাস্তবায়িত হচ্ছিলো না ঠিকমত, সেই সময়ে আমাদের অন্যতম সাফল্য ছিলো ভাষা আন্দোলন, এবং তাই সেটাক

হাওয়াই মিঠাই ৩

মোবাইলের মাধ্যমে অনেক ধরণের সার্ভিস চলে এসেছে এখন বাজারে। প্রথমে ছিলো শুধুই কথা বলা, তারপরে এলো মেসেজ। এরপর ইন্টারনেট, টিভি দেখা, ক্যামেরা, ভিডিও... আরো কত হাবি জাবি। কিন্তু মোবাইলের মাধ্যমে সাত-সমুদ্র পার করে বন্ধুদের পশ্চাদ্দেশে লাথি কষাবার কোন ব্যবস্থা নাই কেন? থাকা দরকার ছিলো। এই মুহুর্তে রাগে দুঃখে ক্ষোভে অস্থির হয়ে আছি! আমাদের কলেজের রি-ইউনিয়ন হচ্ছে। টানা তিনদিন ধরে। পাঁচ বছর পর পর একবার করে হয়। প্রথমটা পেয়েছিলাম যখন কলেজেই পড়ি, সাঙ্ঘাতিক মজা হয়েছিলো সে বারে। তখন কলেজেও আমরা সিনিয়ার, সম্ভবত ইলাভেনে পড়ি, তাই ভাবসাব ছিলো বেশ। পরেরটা কলেজ থেকে বের হবার বছর তিনেকের মধ্যেই, সম্ভবত ২০০৪ এ। প্রতিবারই রিইউনিয়নের নাম দেয়া হয় 'উৎসব'- সাথে সাল যোগ হয়, উৎসব'৯৩, উৎসব'৯৯ এরকম। এবারেও কি তাই হয়েছে? জানি না। ১৪ তারিখ থেকে শুরু হয়ে আজ শেষ হবে সব প্রোগ্রাম। এই তিনটা দিনই খুব অস্থির হয়ে ছিলাম। সারাক্ষণ মিস করেছি পুরনো বন্ধুদের, কলেজকে। মেসেজে হাল্কা পাতলা খবর পাচ্ছিলাম, আজ দুপুরে আর থাকতে না পেরে ফোনই করে ফেল্লাম। তানভীরের সাথে একটু কথা বলেই ফোন হাত বদল হতে থাকলো। তারপরে নাঈম, নে

হাওয়াই মিঠাই ২

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান মন্ত্রী কেভিন রাড একটা ইতিহাস তৈরি করে ফেললেন। ব্যাপারটার বর্ণনা আরও অনেক সুন্দর ভাবে দেয়া যায় নিশ্চয়- পত্রিকায় যেমন লিখেছে- অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে একটি সোনালী পাতা যোগ হলো- বা এরকম কিছু। কিন্তু আমি এত কিছু বুঝি না, আমার কাছে মনে হয়েছে- আলাদা পাতা-টাতা নয়, এই ব্যপারটা নিজেই একটা ইতিহাস। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কেভিন রাড- এই দেশের আদিবাসীদের উপর গত ২২০ বছর ধরে যে অন্যায় ও অত্যাচার হয়েছে, তার জন্যে সোজাসুজি দুঃখ প্রকাশ করেছেন, এবং ক্ষমা চেয়েছেন। বিশেষ করে তাদের কাছে, যাদেরকে বহু বছর আগে নিজেদের বাবা-মা-পরিবারের কাছ থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিলো, এ দেশে যাদেরকে 'স্টোলেন জেনারেশান' নামে ডাকা হয়। আদিবাসীদের ইতিহাস বোধকরি পৃথিবীর কোথাওই আলাদা কিছু নয়। হোক সেটা আমেরিকা, ভারত, বাংলাদেশ অথবা অস্ট্রেলিয়া! সাদা মানুষেরা এই দেশে বসতি বানাবার জন্যে নির্মূ্লের কাছাকাছি নিয়ে গেছে এখানকার এবঅরিজিনদের। মাল্টিকালচারাল দেশগুলোতে যা হয়, এখানেও তার ব্যতিক্রম নয়। এ দেশের শিশুরা তাই বড় হয় সাদা এবং এবঅরিজিন হিসেবেই। কেভিন রাডের ক্ষমা প্রার্থনা- হয়ত তাদের সাদা-কালো না হয়ে- শুধু অস্

ডালিমকুমার কথন

ছ' বছর আগে একদিন --------------------------- ঢাবি-র ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের ক্লাশ। কার্জন হলের দোতলা- গ্যালারিতে। ফার্স্ট ইয়ারের তরতাজা রঙীন ছেলে-মেয়েরা সব, শীতের দুপুরে বসে বসে থার্মোডিনামিক্সের গলি ঘুঁপচিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটা ছেলে স্যারের চোখ এড়িয়ে ক্লাশে ঢুকে গেলো। বুঝাই যাচ্ছে, শীতের আলসেমো কাটিয়ে সকালে উঠতে পারে নি, এখন তাই হন্তদন্ত হয়ে ক্লাশে ছুটে আসা। শার্টের বোতাম সব ক'টা লাগানো শেষ হয় নি এখনো। মাথার চুলে চিরুনি পড়ে নি বোধহয় মাসখানেক হয়। পানি দিয়ে হাত ভিজিয়ে তা দিয়েই চুল আঁচড়ানোর কাজ চলে যায়। ক্লাশে ঢুকে এক পলক দৃষ্টি ছুটে বেড়ায় পুরো রুম জুড়ে। নাহ, জায়গা নেই ওখানে, তাই সোজা পেছনের বেঞ্চিতে গিয়ে বসে পড়ে। খানিকপর ঠুক ঠুক ঠুক। সামনের বেঞ্চির একজন একটা দলা পাকানো কাগজ বাড়িয়ে দেয়। ভুরু কুঁচকে তাকাতেই তার আঙুল অনুসরণ করে দৃষ্টি চলে যায় পাঁচ ছটি বেঞ্চ সামনে। মিষ্টি একটা মুখ ওখান থেকে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। চোখে রাজ্যের রাগ। চিরকুটটা খুললো ছেলেটা- দ্যাখে- সেখানে লেখা- 'ব্যাটা তুই দেরি করে এলি তো এলি, আমার পাশে বসলি না ক্যান? জানি তো বলবি জায়গা নেই! বলি, এই মোটকাটারে যদি গুঁতো

হাওয়াই মিঠাই

এইরকম শীত শীত দুপুরগুলোয় কোল পেতে আরো বেশি শীত টেনে নিতে ইচ্ছে করে। হাতের আঁজলা ভরে বেশ খানিকটা শীত তুলে নিয়ে মুখে মাখিয়ে ঝরঝরে রোদে ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে। কাগজে কলমে সামার এখন। কিন্তু আচমকা কোত্থেকে যে শীতের বুড়ি এসে এইখানে বেশ করে চাগিয়ে বসলো, কে জানে! কদিন আগেও গরমে মাথার তালু চিড়বিড় করে উঠতো, টেম্পারেচার ছিল ৩৮, ৪০। এখন সেখানে দেখায় নীরিহ নিপাট ১২, অথবা খুব বেশি হলে ১৪। রাতের বেলা গায়ের উপর আয়েশী কম্বল টেনে নিলে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বলে মনে হয়। কিন্তু হায়, সকাল বেলা আমীররে তুই, ফকির সন্ধ্যাবেলা। সেই কাক-না-ডাকা ভোরে যখন সেই কম্বল ঠেলে উঠে কাজে যেতে হয়, মনের ভেতর ভীষন রাগ চেপে যায়, ইচ্ছে করে এখুনি দেশের টিকেটের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করি। তা আর হয়ে ওঠে না। লাট্টুর মতন ঘুরতে ঘুরতে জীবন কাটাতে থাকি, প্রতি দিনকার বাঁধা ধরা পৌনপুনিকতায়। * ওজন বেড়ে যাচ্ছে সাংঘাতিক ভাবে। খাওয়া কমাতে পারি না, তাই ওজন ঠেকাতে একটা ব্যায়ামের যন্তর কেনা হলো। কিন্তু সেটা দিয়ে আর কিছু করা হয়ে ওঠে না। রোজ সকালে উঠে সেই মেশিনটার দিকে ঘড়ি ধরে তিন মিনিট তাকিয়ে থাকি। ব্যস, তাতেই কেমন হাস ফাঁস লেগে ওঠ

মন্তব্য-পোষ্টঃ প্রজাপতিকাল

প্রজাপতিকাল দেখা শুরু করেছি রাত বারোটায়, এবং তাও সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠতেই হবে এরকম একটা তাড়া নিয়ে। তবে সত্যি কথা হচ্ছে, টেলিফিল্মটি শুরু হবার পরে ঘুমের কথা একেবারেই ভুলেই গেছি, এবং ঘুম থেকে উঠবার কথাও। এক কথায় অনুভুতি জানতে চাইলে বলবো, খুব ভাল লেগেছে। কিন্তু তাহলে আরো কিছু বলার বাকি থেকে যায়। প্রথমেই চমকে উঠেছি বাবু'র মেকআপ দেখে। দুর্দান্ত হয়েছে সেটা, একদম প্রথমবার স্ক্রীণে বাবুকে দেখেই একটা গা শিউরানো ভাব হয়েছে মনে। কিন্তু নাটক ক্রমশ এগুতে থাকলে জয়া ( বাবুর স্ত্রী) যেমন করে ঐ ভয়ংকর মুখটার আড়ালে সবচেয়ে সুন্দর মুখ খুঁজে পেয়েছিল, জয়ার সাথে সাথে আমরাও দেখতে পাই যেন সেই মুখটাকে। জয়ার অভিনয় চমৎকার হয়েছে। বাবুর কথা নতুন করে বলার নেই আর। এই সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী অভিনেতার নাম জানতে চাইলে আমি কোন দ্বিধা ছাড়াই বলবো বাবুর নাম। ভাল হয়েছে মিলনের অভিনয়ও। সোজা করে আচড়ানো চুলের সমান্তরালে বারবার হাত মুখের উপর বুলিয়ে নেয়ার দৃশ্যায়ন বাস্তব মনে হয়েছে পুরো সময়েই। অথবা কাজীর সামনে জয়া'র বিয়ে হয়ে যাবার আকস্মিকতায় হঠাৎ যখন সে কেঁদে ওঠে, একটুও বাড়াবাড়ি লাগে নি। নিমা রহমানকে অনেকদিন পর দেখলাম পর্দ