Posts

Showing posts from January, 2025

সুহান রিজওয়ান-এর জার্নাল

Image
দু হাজার পনের থেকে বিশ, এই ছয় বছরে লেখা সুহানের দিনলিপির বাছাইকৃত ভুক্তির সংকলন এই বই। ফেসবুক টুইটারের এই যুগে দিনলিপি লিখে রাখার মত মানুষ খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না; সুহান সেই বিরল মানুষদের একজন। ব্যক্তিগত জার্নাল হলেও লেখার গুণে, সেই সাথে, 'আমি' বা 'আমার' শব্দের বাহুল্য নেই বলে (যেটা আসলে লেখারই আরেক গুণ) এই বইটির বক্তব্য ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে গেছে, হয়ে দাঁড়িয়েছে সময়ের প্রতিচ্ছবি। প্রতিটা নতুন বছর শুরুর সাথে সাথে চোখ বুজে একবার ভাবার চেষ্টা করলাম, ওই সময়টায় কোথায় ছিলাম আমি। যেনবা দেশ থেকে বহুদূরে বসে যে শূন্যতা অনুভব করি প্রতিনিয়ত, পাজলের একটা টুকরোর মত এই বইটা যেন কিছুটা তা পূরণে সাহায্য করে আমায়। ভালো লাগার মত অংশ রয়েছে অনেক, দারুণ সব উক্তি, কোটেশন, বই বা লেখকের উল্লেখ, পেন্সিলে দাগিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছি। তবে, উপন্যাস তৈরির সময়টায়, তৈরি হতে থাকা উপন্যাসিকের অন্তরে যে টানা পোড়েন, এ অংশগুলোই মনে জায়গা করে নিয়েছে বেশি।  All reacti

ছোটগল্প সমগ্র | মতি নন্দী

Image
মতি নন্দীর উপন্যাস পড়েছি আগে, ছোটগল্প পড়া ছিল না। প্রায় সত্তরটার মত গল্প রয়েছে এই বইয়ে। হাতে গোনা তিন চারটে বাদে বেশিরভাগই ভাল লেগেছে। এরকম হয় না সাধারণত। এমন সব মানুষের সাথে দেখা করিয়ে দিলেন মতি নন্দী, যাদের সাথে সাধারণত দেখা হয় না আমাদের। অবাক হয়েছি নিজের গণ্ডিবদ্ধ জীবনের কথা ভেবে। একটা গল্প কয়েকবার পড়া হল, 'শহরে আসা'। কী দারুণ গল্পটা! লেখায় কোথাও ভাষার মারপ্যাঁচ বড় একটা নেই। প্রতিটা গল্প যেন হাতে ধরা যায়, ছোঁয়া যায়, চেনা যায়।

অর্ধেক জানুয়ারি-

Image
লিলি-রোজ বিনতে জ্যাক স্প্যারো দারুণ অভিনয় করে। এতটা আশা করিনি। মতি নন্দী-র ছোট গল্পও, এতটা আশা করিনি। কে জানত এত ভাল গল্প লেখেন তিনি। কোনো অং বং চং নেই, গল্প বলছি বলে অহেতুক টালবাহানা নেই, সলিড সব গল্প একেবারে। সেগুলো পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তবু হেলাল হাফিজকে মনে পড়ল অনেকবার। বড় বেদনার মত বেজে গেলেন তিনি বুকে, বারবার, বারবার। 'পান্তাভাতে' পড়তে পড়তেও মনে হল একবার, গুলজার যদি চিনতেন হেলাল হাফিজকে, কত ভালই না হতো। পান্তাভাতে বইটায় নিজের নামে একটা চ্যাপ্টারের মালিক হয়ে যেতেন তিনি হয়ত। অথবা, যেমনটা ফিটজেরাল্ড বা এজরা পাউন্ড জায়গা পেয়েছেন হেমিংওয়ের প্যারিসের স্মৃতিতে। অবশ্য স্মৃতিতে জায়গা পেলেই বা কী আসে যায়। ইমতিয়ার শামীম চিরসত্যের মত তবু বলে যান, কোভিডে মরুক বা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে লাগা আগুনে, সেই মরাকে আরও একবার করে মারে চেনা জানা মানুষেরাই। মানুষ তাই বাঁচাবে মানুষকে, এতটুকুও হয়ত আশা করি না আর।

পান্তাভাতে । গুলজার

Image
  গুলজারকে কত ভূমিকায়ই না দেখি। সবচেয়ে বেশি চেনা হলেন গীতিকার গুলজার। অথবা কবি। পান্তাভাতে পড়তে পড়তে পরিচালক আর চিত্রনাট্যকার গুলজারকেও জানা হলো ভালো করে। পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম নেওয়া গুলজারের বাংলা প্রীতি অসামান্য, এতটাই যে নিজেকে বাঙালী বলে পরিচয় দিতে দ্বিধা করেন না। তাঁর দীর্ঘ জীবনে সঙ্গী হওয়া আরও কিছু মানুষ, যাদের সবাই আমাদের চেনা, তাঁদের কথা উঠে এসেছে এই বইয়ের লেখাগুলোয়। বিমল রায়, সলীল চৌধুরী, কিশোর কুমার, সঞ্জীব কাপুর, শর্মিলা, ঋত্বিক ঘটক, রাহুল দেব বর্মন, মহাশ্বেতা দেবী, ভীমসেন যোশী, রবিশংকর, এরকম আরও অনেকে। টুকরো টুকরো স্মৃতির মত লেখাগুলো, কোনোটাকেই পূর্ণাঙ্গ বলা যাবে না হয়ত। বরং অনেকটা স্ন্যাপশটের মত। ছবির অ্যালবামের মতই, জমিয়ে রাখা যায়।