Posts

Showing posts from November, 2024

নো ওয়ান রাইটস টু দ্য কর্নেল | গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ

Image
রেমন্ড কারভারের একটা গল্প আছে, নাম- 'কল ইফ ইউ নিড মি'। এটা দেখলেই আমার কেন জানি মনে হয়, 'মাঝে মাঝে পত্র দিয়ো'। জগজিৎ সিং এর ওই গানটা খুব পছন্দ, 'কিসকা চেহরা আব মে দেখু, তেরা চেহরা দেখকার'। আর আমি শুনি, 'বাংলার রূপ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর'। রোজ সকালে কফির কাপে চামচ নাড়তে নাড়তে এই বুড়ো কর্নেলকে খুব মনে পড়ে। বছরের পর বছর লঞ্চঘাটে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো সে, একটা চিঠি আসার কথা তাঁর নামে। মার্কেজের লেখা এই নাতিদীর্ঘ নভেলা আমার খুব প্রিয়। মাঝে মাঝেই এর পাতা উল্টাই, আর নতুন নতুন দৃশ্য চোখে জ্যান্ত হয়ে ওঠে যেন। এবারে যেমন মনে হলো, কর্নেল দম্পতির একমাত্র সন্তানের মৃত্যু হয়েছে, তবু বাড়ির পোষা মোরগটাকে হারানোর আসন্ন ভয় কি কোথাও কোথাও ছেলে হারানোর বেদনাকে ছাড়িয়ে গেছে? হয়ত। এখানে, এখন নিয়ম করে মাসে একবার ডাক্তার দেখাতে যাই। হাতে সিরিয়াল নাম্বার লেখা স্লিপ নিয়ে অপেক্ষা করি ক্লিনিকের ওয়েটিং রুমে। সামনের স্ক্রিনে একের পর এক নাম্বার ভেসে ওঠে, আর পাশে বসে থাকা মানুষেরা একজন একজন করে উঠে ভেতরে ঢুকে যায়। প্রতিবার স্ক্রিনে আওয়াজ হলেই চট করে একবার তাকি...

কিছু এর রেখে যাই | আলী আহমাদ রুশদী

Image
স্মৃতিকথা পড়তে ভালো লাগে বলে এক দুপুরে বইটা পড়া শুরু করেছিলাম। বারোটায় শুরু করে মাঝে কেবল খাওয়ার বিরতি ছাড়া উঠতে পারিনি, রাত নয়টায় পুরো বই শেষ করে তবে থেমেছি। সময়ের বিচারে অনেক বিস্তৃত এই স্মৃতিকথা, স্থানের বিচারেও। ৪/৫টি দেশে কাটানো সময় আর প্রায় সাত দশকের কথা...। প্রায় আড়াইশ পৃষ্ঠায় একটা কর্মমুখর জীবনের বিবরণ পড়ে গেলাম গোগ্রাসে, আর মুগ্ধ হলাম। তবে আমার হয়তো বেশি ভালো লেগেছে কিছু কিছু স্মৃতি মিলে যাওয়ায়। গ্রামের কোন্দা চালানো, জাল ফেলে মাছ ধরা আর সুপারি গাছে ওঠার স্মৃতি, অথবা ডাকাতিয়া নদী। আবার কুমিল্লা, ঢাকা, টাংগাইল, মেলবোর্ন, এক জায়গায় এক সাথে এই পরিচিত চারটে শহরকে পাওয়াও হয়তো আরেকটা কারণ। গ্রামের মাদ্রাসা থেকে পাশ করা একজন তরুণ পড়তে চান অর্থনীতি নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার তীব্র ইচ্ছাও ছিলো তাঁর, কিন্তু এখানে এসে শুনলেন ভালো ফলাফল থাকা সত্বেও অর্থনীতি পড়ার সুযোগ পাবেন না, শিক্ষকেরা তাঁকে ভর্তি হতে বললেন ইসলামিক স্টাডিজে। তিনি ভাবলেন, ইসলামিক স্টাডিজ নতুন কিছু শেখাতে পারবে না তাঁকে, তিনি অর্থনীতিই পড়বেন। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছায় মুলতুবি দিয়ে অর্থনীতি নিয়ে পড়ার জন্যে তি...

আমাদের চিঠিযুগ কুউউ ঝিকঝিক | ইমতিয়ার শামীম

Image
  আমাদের সমস্ত গা-জুড়ে বড় বড় শহরের গন্ধ। আমাদের গল্প কবিতা গানে কেবলই নগরের নুয়ে পড়া আলাপ। অথচ, তার মধ্যেও এই অদ্ভুত গল্পটার কথককে বইয়ের ভাঁজ খুলে একটা মৃত পাতাকে সাক্ষী রেখে খানিকক্ষণ কেঁদে নিতে দেখে খুব অবাক হই আমি। কোন ভুলে যাওয়া এক মফস্বলের এক বিশাল চওড়া রাস্তার ধারে একটা ভাঙা চায়ের দোকানে আমাদের যে অস্তিত্ব ডোবানো, মনে পড়ে যায় তার কথা। যেনবা টাইম মেশিনে চড়ে বহু আগের কোনো বিষণ্ণ কিশোরের লুকিয়ে রাখা ডায়েরি পড়লাম বসে বসে। মনে পড়লো, রঙ্গন গাছের ঝাঁকে, অথবা কুয়াশায় ডুবে যাওয়া ফুটপাতে এরকম কত কত ডাকঘর, আর তাতে লুকিয়ে থাকা কত কত চিঠি খুঁজে বেড়ানো কয়েকজন কিশোরের কথা।