Posts

Showing posts from October, 2024

ব্ল্যাক ডগ | নিল গেইম্যান

Image
ব্ল্যাক ডগ নতুন গল্প নয়, নিল গেইম্যানের ট্রিগার ওয়ার্নিং নামের সংকলনে আছে গল্পটা। এই বইয়ে শুধু ব্ল্যাক ডগ আলাদা করে ছাপা, সাথে ইলাস্ট্রেশন। আর এই অলংকরণের লোভে পড়েই মূলত কেনা হলো বইটা। আমার কাছে এই ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। মানে সংকলন থেকে নিয়ে বড় একটা গল্পকে ছবিসহ আলাদা বই হিসেবে প্রকাশের চিন্তাটা। নিলের লেখা পড়তে গেলে একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে। যেকোনো বই পড়ার সময়, আমাদের মাথার ভেতরে একজন কেউ বইটা শব্দ করে পড়তে থাকে। আমরা যখন মনে মনে পড়ি, আমরা আসলে সেই শব্দটা শুনতে থাকি। সাধারণত সেই কণ্ঠ হয় আমাদের নিজের (সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না-ও হতে পারে)। কিন্তু আমি খেয়াল করে দেখেছি, গেইম্যানের লেখা যখন পড়ি, তখন মাথার ভেতর পড়ে চলা কণ্ঠটা আমার থাকে না, সেটা হয়ে যায় নিলের গলা। ব্যাপারটা প্রায় ভৌতিকই বলা যায়! তবে এর পেছনে কারণ কী তা ভেবে বের করেছি। অডিওবুক এমনিতে আমার পছন্দ নয়, বিশেষ করে ফিকশনের জন্যে। নন-ফিকশন বা পডকাস্ট অবশ্য শুনতে পারি। তবে কোরালাইন দিয়ে নিলের নিজের কণ্ঠের অডিওবুকের সাথে পরিচয় হবার পরে, তাঁর ন্যারেশনের ভক্ত হয়ে গেছি। ব্ল্যাক ডগের অডিওবুক লোকাল লাইব্রেরি থেকে ধার নেয়া যাবে ...

গ্রামায়নের ইতিকথা | ইমতিয়ার শামীম

Image
  উপন্যাস ভেবে পড়া শুরু করি, শুরুর তিন অধ্যায় পড়া হয়ে গেলে প্রথম চোখে পড়ে যে নতুন চরিত্ররা এসে হাজির হচ্ছে প্রতিবার। চরিত্র নতুন, কিন্তু গল্পগুলো যেন অভিন্ন মানুষদের, কেমন একের ওপর আরেক ছড়িয়ে ছিটিয়ে এলিয়ে বিছিয়ে আছে। বইয়ের শেষ পাতায় গিয়ে জানলাম ছয়টা ভিন্ন গল্প এগুলো। এবারে ফ্ল্যাপে পড়া কথাটার মানে বুঝতে পারলাম, 'উপন্যাসের আদলে...কথকতার এক নতুন বিন্যাস...,যা একই সাথে ছোটগল্প আবার উপন্যাসের বিশাল মাত্রাকেও ছুঁয়ে যায়।' 'আমরা হেঁটেছি যারা'-র পরে আমার পড়া ইমতিয়ার শামীমের লেখা মাত্রই দ্বিতীয় বই এটা, কিন্তু সর্বশেষ যে নয়, এ কথা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি। পাঠক হিসেবে ব্যাপারটা ভীষণ আনন্দেরও বটে।

মির্জা গালিবের গজল

Image
  অনুবাদক জাভেদ হুসেনের লেখা ভূমিকা গালিবের জন্যে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। কবি মির্জা গালিবকে সেখানে খুব কাছের, খুব চেনা একজন মানুষ বলে মনে হয়। অনেকগুলি উর্দু আর অল্প কিছু ফারসি গজলের অনুবাদ রয়েছে এই বইয়ে। পড়তে গিয়ে টের পেলাম, উর্দু আসলে কানে শুনেই অভ্যস্ত আমি। বাংলা হরফে উর্দু পড়তে যাওয়া খুব সহজ কাজ নয়। এমনকি উচ্চারণ করে পড়ার চেষ্টা করলাম যখন, তখন সেগুলোকে চেনা কোনো ভাষা বলে মনে না হওয়ায় ক্ষান্ত দিলাম দ্রুত। বরং বাংলা অনুবাদগুলো মন দিয়ে পড়া হলো বেশি। কী সুন্দর, সহজ, সরল অনুভব সেগুলোয়। কখনও গালিব সেখানে অনুরোধ করছে, মরে গেলে যেন প্রিয়ার গলিতে তাকে কবর দেয়া না হয়। লোকে গালিবকে দেখতে এসে তার প্রিয়ার বাড়ির খোঁজ পেয়ে যাবে, এটা তার মরার পরেও সহ্য হবে না। অথবা অন্য এক জায়গায় গালিব খোদাকে বলছে, কেন তুমি আমাকে স্বর্গ থেকে বিদায় করে দিলে? করেছই যখন, দুনিয়াতে অনেক কাজ আমার, এখন অপেক্ষা করো, শেষ না করে আসছি না। মৃত্যু বিলম্বিত করার কী দারুণ বুদ্ধি! প্রথমা প্রকাশনীর বইগুলোয় যত্ন টের পাওয়া যায়। সুন্দর বাঁধাই, প্রচ্ছদ, ভেতরের অলংকরণ...। এরকম বই হাতে নিয়ে পড়তে ভালো লাগে।

গাইলে বৈরাগীর গীত গাইও

Image
  ডালে বসে থাকা চাতকী ময়নাকে আসগর আলী বলে, গাইতেই যদি হয় তো বৈরাগীর গীত গাও। প্রথম শুনিয়েছিলেন তপন চৌধুরী, প্রায় এক কোটি বছর আগে। সেদিন ইউটিউবে খুঁজতেই সেই অসাধারণ অ্যালবামটা পেয়ে গেলাম– মনে করো তুমি আমি। কোটি বছর আগে শুনলেও দেখা গেলো, সবগুলো গানের অন্তত প্রথম কিছু লাইন এখনও মাথা থেকে বিদায় নেয়নি। বসে বসে পুরো অ্যালবাম টানা শোনা হলো আরেকবার। ময়নার গানটা খুব প্রিয় ছিলো, যদিও পুরোটা মনে ছিলো না। এবারে শুনে টের পেলাম, শুরুতে যাকে বৈরাগী বলা হচ্ছে, সে কোনো অ্যাবস্ট্রাক্ট চরিত্র নয়। "কহে হীন আসগর আলী, সময় হইলে পরে, মাধব বৈরাগীর সনে, পরান বন্ধুয়ার সনে, মিলাই দিবো তোরে।" মাধব বৈরাগী নামের একজন মানুষ আসগর আলীর প্রাণের বন্ধু। বন্ধুর অপেক্ষায় থেকে অস্থির হয়ে ময়নাকে জিজ্ঞেস করে আসগর আলী, পূব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ কোন দিক দিয়ে আসবে তাঁর বন্ধু, এখুনি জানানো হোক তাঁকে। আর বন্ধু যতক্ষণ নেই, ততক্ষণ ময়না যেন তাঁর বন্ধুর গানই গাইতে থাকে। এক কোটি বছর পরে গানটা নতুন করে আবার ভালো লাগলো!