Posts

Showing posts from November, 2009

কবি

যখন বয়েস কম ছিলো, অনেক সাহসী ছিলাম তখন। একেকটা ছোট ছোট রুলটানা কাগজের ডায়েরি, সেগুলোতে গোল গোল হরফে নানা রকম হাবিজাবি লিখে রাখতাম। কেউ জিজ্ঞেস করলে যে “কী এগুলো?”, নেপোলিয়ান অথবা আলেকজান্ডারের চেয়েও বেশি অহমিকা নিয়ে উত্তর দিতাম, “এগুলো কবিতা। কবিতা লিখেছি। ” তারপর অনেকদিন গেলো। দিন যেতে যেতে পৃথিবীতে সবচেয়ে বাজে যে ব্যাপারটা ঘটল তা হলো যে, আমি বড় হয়ে গেলাম। কেন যে বড় হলাম, এই নিয়ে আমার দুখের সীমা নাই। এখন আর ডায়েরিতে হিজিবিজি লিখতে পারি না, লেখা আসেই না একদম। অনেকদিন পরে পরে হয়তো আসে দুয়েকটা লাইন, ভীষণ আনন্দ নিয়ে সেগুলোকে লিখে ফেলি খাতায়, কিন্তু তারপরে যখন পড়তে যাই, বুঝে যাই যে আমার সাহস কমে গেছে, আগের মতন দুর্মর বা দুর্বার ভঙ্গিতে এখন মোটেও সেগুলোকে কবিতা দাবি করতে পারি না। মনে ভয় হয়। অথচ কবি হবার লোভ আমার অনেকদিনের। এই লোভের বয়েস, যদি দিন মাস গুনতে বসি, তাহলে ঠিক আমার বয়েসেরই সমান। কিন্তু কবি হতে পারিনি আমি, অথবা কবি হওয়া হয়ে ওঠেনি আমার। ক্লাস সেভেনের দিকে নির্মলেন্দুতে জমেছিলাম খুব। এই দীর্ঘকায় কবির কবিতাগুলো কেমন করে যেন আমাকে জাদুটোনা করে ফেলেছিলো। শহরে থাকি বলে চাঁদ দেখতে

বিকেলবেলায়...

কবেকার কোন বৈশাখী মেলা থেকে একটা লাল ডুরে শাড়ি কিনে এনে দিইনি বলে সে আমার থেকে দূরে সরে সরে থাকে শুধু। ব্যস্ত দুপুরের কোন একদিন একটা কাঠি লজেন্স অথবা হাওয়াই মিঠাই এর আবদার আমার মন ভুলে গিয়েছিলো হয়ত, সেই থেকে, অভিমানী মেয়ে গাল ফুলিয়ে কেবলই ছলছল চোখে চেয়ে দেখে আমাকে, কাছে আসে না। বিকেলের ভেজা আলোয় আজ মনে পড়লে এক হাতে রঙিন ফিতে আর অন্য হাতে কিছু ঝিলিমিলি চুড়ি নিয়ে আনাচে কানাচে কেবলই খুঁজে বেড়াই তাকে। দেয়ালে বসা টিকটিকি যেন শুনে না ফেলে অথবা আমার জানলায় উঁকি দেয়া কাঠবিড়ালিকে লুকিয়ে আমি ফিসফিস করে ডাকি, কবিতা, কোথায় রে তুই? আর একটিবার আমার কাছে আয় সোনা মেয়ে। মরে যাবার আগে একটা দিন আমি কবি হয়ে বাঁচি। ------------- ২১/১১/০৯