Posts

Showing posts from July, 2008

হাওয়াই মিঠাই ১০

গত কয়েকদিন খারাপ খবর পেয়ে পেয়ে আমার সেটাই অভ্যেস হয়ে গিয়েছিলো। ব্লগ আর মেইল খুলে আজ শুনি এই তো কাল শুনি ঐ। সারাদিন মুখ কালো করে ঘুরে বেড়াতাম, আর ভাবতাম, আশি নম্বর বন্দরে এই কর্মবিরতির কারণ কি? মাঝে অনেক জল ঘোলা হয়েছে, আপাতত সুদিন ফিরে এসেছে, এখন আবার স্বর্গের দুয়ার খোলা, আমিও হাঁপ ছেড়ে বলি লে বাবা। মনটাও বেশ ফুরফুরে। এই ফুরফুরানির পেছনের আরও একটা কারণ- দেশ থেকে কিছু বই হাতে পেলাম কালই। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলাম । বহুদিন বইমেলায় যাই না, নতুন বইয়ের গায়ে নতুন প্রেমিকার চেয়েও বেশি নেশা ধরানো মাতাল গন্ধ থাকে, সেটার স্মৃতি প্রায় ভুলতে বসেছিলাম, অনেকদিন পরে ফিরে এলো। বইয়ের লিষ্টি এখান থেকেই পাঠানো। বহু দৌড়ঝাঁপ করে সুহৃদরা খুঁজে খুঁজে কিনেছেন। এর মধ্যে কিছু ব্লগারদের বই। আলবাব ভাইয়ের বউ, বাটা বলসাবান দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলো। এইরকম আকৃতির বই- ঠিক একটানে কিশোরবেলায় নিয়ে আছড়ে ফেলে। সেই শীর্ষেন্দুর জাদু-মাখা বইগুলোয় ছেয়ে থাকা কিশোর বেলা! আরিফ জেবতিকের ধুলিমাখা চাঁদের ফক্ফকে জোছনার একটা টুকরাও আমার বাসায় এখন। এখনও সচলায়তনের পূর্ণ ব্লগার নয়, সেই মূর্তালা রামাতের কষ্টালজিয়ার, কি মুশকিল, একেবারে দু

বলদ প্রজন্ম

রাত-ঘুমে আমি আর কোনও স্বপ্ন দেখবো না বলে পণ করেছি। তারচে ঢের ভাল, কুচি করে কাটা ছোট পেঁয়াজ মাখিয়ে, আর খানিকটা সর্ষে তেলে, ভাজা ভাজা, মুড়ি খাই বসে। গুরুজনেরা বলে গেছেন, মাঝে মাঝে ওরকম মুড়ি খাওয়া ভালো। আয়নায় দুয়েকবার, ভুলে চুকে, চোখ পড়ে গেলে, খানিকটা লাজ শরম লাগে বৈকি! তবু, খুবেকটা চিন্তিত নই। বাজারে হালাল সাবানের ছড়াছড়ি, মুখ ধোয়া মোছা শেষ করে, জিভ দিয়ে সামান্য চেটে নিলেও বেশ কাজে দেয়। ভেতর বাহির, সবই পাক-সাফ। দিনমান, আলু দিয়ে রুটি দিয়ে ভাজি ভুজি খাই, চাপাতিও খাই, মাঝে মাঝে চড় চাপাটিও খাই। তাপ্পরে, ঘরে এসে, মুড়ি খেতে খেতে বসে বসে, সব ভুলে যাই। মাথায় দিলে নাকি কদুর তেলেও বেশ আরাম। পিঠে সেটা তেমন আর কাজে দেয় কই, তার জন্যে মাখি টাইগার বাম। ওরকম শপাঁচেক লাথির দাগ, আর্টিস্টির শার্ট দিয়েই কি দারুণ ঢেকে দেয়া যায়। ক্ষত-টত সবই বাজে কথা। ল্যাপি কোলে নিয়ে, লেপের ভেতর, স্বমেহনের উদ্দামতার পর, মুড়ি খেলেই সব চুকে বুকে যায়। মেরুদন্ডে জোরালো ব্যথা নিয়ে, আমি তবু রোজ দিনে, তাহাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াই। দেশ এগিয়ে যায়, আমি বসে বসে মুড়ি খাই।

হাওয়াই মিঠাই ৯

Image
সাত সকালে ঘুম ভেঙ্গে অফিসগামী ট্রাফিক, তিনচারটে রেড লাইট, আর আরেকটু হলেই ওয়েস্টগেইট ব্রীজটাকে পাশ কাটিয়ে পড়িমড়ি করে ছুটে ইন্সটিটিউটে যাবার পর যখন জানলাম সবাই মিলে পার্লামেন্ট হাউসে যেতে হবে, শুনেই চিড়বিড়ে অনুভুতি হলো মনে। কাইন্ড অব এক্সারশান। আঙুল গুনে দেখলাম তিনটা কারণে মেজাজ খারাপ করার অধিকার আছে আমার। এক, এখুনি আবার দৌড় লাগাতে হবে, তাই। দুই, যেতে হবে সিটির মাঝখানে। এরা পার্লামেন্ট বানিয়ে রেখেছে একদম সিটির ভেতরে, যেখানে দিনের এই সময়ে পার্কিং খুঁজে পাওয়া আবুল হায়াতের মাথায় চুল খুঁজে পাবারই শামিল। আর তিন, আরে ব্যাটা এদের পার্লামেন্ট আবার দেখার কি আছে? দেখতে হলে আয় আমাগো শেরেবাংলা নগর, দেখায়া দিই লুই কান কি একটা চুম্মা জিনিস বানায়ে রাখছে! ঐ জিনিস একবার দেখলে দুনিয়ার আর কোন পার্লামেন্টে মন লাগে? এক গাদা টুট টুট শব্দে ভরা বাক্য মনের ভেতর গজরাতে গজরাতে শেষমেষ হাজির হলাম ভিক্টোরিয়ান পার্লামেন্ট হাউসের সামনে। প্রথম দর্শনে মনে হলো, চলেবল। টেনেটুনে পাশ মার্ক দেয়া যায় আমাদের সংসদ ভবনের কথা মাথায় রাখলে। ঢোকার সময়ে, মনে মনে ধন্যবাদ জানালাম সিকিউরিটির বাড়াবাড়ি নেই দেখে। একটা নীরিহ দর্শন মেটাল ডিট

হাওয়াই মিঠাই ৮

আমার এক বন্ধু দেশ থেকে ঘুরে এলো সম্প্রতি। যাবার সময় "কিছু আনতে হবে কি না"- এই প্রশ্নের উত্তরে প্রায় নির্দ্বিধায় সাম্প্রতিক সময়ের মুভিগুলোর ডিভিডি নিয়ে আসতে বললাম। এমনিতে এখানকার মুভি ক্লাবে ডিস্কপ্রতি ভাড়াও খুব বেশি না, সস্তাই বলা চলে। তবু ইষ্টার্ণ প্লাজার সাথে তার কোন রকম তুলনাই চলে না। এছাড়া একদম নতুন মুভিগুলোও পেয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। ইতিমধ্যেই আমি দ্রোহী ভাইয়ের দেয়া লিংকে গিয়ে নতুন মুভি দেখতে দেখতে মাসের প্রথম সাতদিনেই আমার পুরো মাসের ডাউনলোড কোটা খতম করে বেজায় বিপাকে পড়েছি। এজন্যেই শাস্ত্রে আছে, দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথায় কান দিতে নেই। দ্রোহী ভাই এর পরে যতই লোভনীয় লিংক হাজির করুন, আমি আর ঐ পথে পা বাড়াচ্ছি না। তো, বন্ধু এখানে ফিরবার সাথে সাথে আমিও আচমকাই প্রায় শ"খানেক দেখা না দেখা সিনেমার মালিক বনে গেলাম। এই অযাচিত আনন্দে গত কদিন অনেকগুলা সিনেমাও দেখা হয়ে গেল টপাটপ। প্রথমদিন মুভিগুলোর এলবাম হাতে নিয়ে দেখছিলাম কি কি আনা হলো, দেখতে দেখতে এই সিডি যারা তৈরি করেন, তাদের বুদ্ধির প্রশংসা না করে পারা গেল না। হরেক রকমের কালেকশান একেকটা ডিভিডিতে। একসাথে তিন/চার বা পাঁচটি মুভি

মন, হাওয়ায় পেয়েছি তোর নাম-

বড় হয়ে যাওয়াটা সবসময়ে ভাল কিছু নয়। বড় হতে হতে যেটা হয়, শৈশব আর কৈশোরের জমানো সব ঐশ্বর্যগুলো টপাটপ হারিয়ে যেতে থাকে। আমার প্রায়শই এই বলে ভ্রম হয় যে, রাজা সলোমনের চেয়ে আমি কোন দিক দিয়ে কম ঐশ্বর্যবান ছিলাম না। কখনও গোনাগুনতির সুযোগ পাইনি, মাথায়ও আসেনি যে হিসেব রাখতে হবে বা এরকম, কিন্তু যদি গুনে রাখতাম, কোন একটা পাতার শুরু থেকে শুরু করে, আমার অজস্র জমানো বা কুড়িয়ে পাওয়া ধন-সম্পদগুলোর প্রতিটির নামধাম লিষ্টি করলে, হয়তো, প্রায় মাইলখানেক লম্বা কোন তালিকা হয়ে যেত। খেলতে খেলতে কালো রঙ্গের একটা কাঠি কুড়িয়ে পেয়েছিলাম একবার। ড্রাম পেটানোর জন্যে যেগুলো ব্যবহৃত হয় অনেকটা সেরকমই। কেমন করে যে এলো ওটা আমাদের বাড়িতে, তা ভেবে দেখার সময় হয়নি, কিন্তু ঐ লাঠি হাতে নিয়েই আমি হয়ে গেলাম জাদুকর জুয়েল আইচ। ওটা হয়ে গেল আমার জাদুর লাঠি। সারাদিনমান সেটাকে হাফপ্যান্টের কোমরে গুঁজে আমি ঘুরে বেড়াতাম, আর সুযোগ পেলেই সকলের চোখের আড়ালে মনের সুখে জাদু করে বেড়াতাম। আম্মার আলমারিটাকে ছুঁয়ে দিলেই সেটা হয়ে যায় যেন হীরে-মণিভরা সিন্দুক। অথবা আমাদের টিভিটাকে ছুঁয়ে দিলে তার ভেতরে দিয়ে দেখা যেত তেপান্তরের ঐ পারের কোন রাজকন্যার ঘুমি