হাওয়াই মিঠাই ৯

সাত সকালে ঘুম ভেঙ্গে অফিসগামী ট্রাফিক, তিনচারটে রেড লাইট, আর আরেকটু হলেই ওয়েস্টগেইট ব্রীজটাকে পাশ কাটিয়ে পড়িমড়ি করে ছুটে ইন্সটিটিউটে যাবার পর যখন জানলাম সবাই মিলে পার্লামেন্ট হাউসে যেতে হবে, শুনেই চিড়বিড়ে অনুভুতি হলো মনে। কাইন্ড অব এক্সারশান। আঙুল গুনে দেখলাম তিনটা কারণে মেজাজ খারাপ করার অধিকার আছে আমার। এক, এখুনি আবার দৌড় লাগাতে হবে, তাই। দুই, যেতে হবে সিটির মাঝখানে। এরা পার্লামেন্ট বানিয়ে রেখেছে একদম সিটির ভেতরে, যেখানে দিনের এই সময়ে পার্কিং খুঁজে পাওয়া আবুল হায়াতের মাথায় চুল খুঁজে পাবারই শামিল। আর তিন, আরে ব্যাটা এদের পার্লামেন্ট আবার দেখার কি আছে? দেখতে হলে আয় আমাগো শেরেবাংলা নগর, দেখায়া দিই লুই কান কি একটা চুম্মা জিনিস বানায়ে রাখছে! ঐ জিনিস একবার দেখলে দুনিয়ার আর কোন পার্লামেন্টে মন লাগে?

ভিক২এক গাদা টুট টুট শব্দে ভরা বাক্য মনের ভেতর গজরাতে গজরাতে শেষমেষ হাজির হলাম ভিক্টোরিয়ান পার্লামেন্ট হাউসের সামনে। প্রথম দর্শনে মনে হলো, চলেবল। টেনেটুনে পাশ মার্ক দেয়া যায় আমাদের সংসদ ভবনের কথা মাথায় রাখলে।
ঢোকার সময়ে, মনে মনে ধন্যবাদ জানালাম সিকিউরিটির বাড়াবাড়ি নেই দেখে। একটা নীরিহ দর্শন মেটাল ডিটেক্টরের মাঝখান দিয়ে চলে যেতে হলো। পকেট থেকে চাবির গোছা, ভাংতি পয়সা সব কিছু আলাদা ট্রেতে দিয়ে কোনরকম ঝুট ঝামেলা বাদেই অন্য পাড়ে চলে গেলাম। কিন্তু আমাদের একজন সঙ্গীকে ঠিকই আটকে যেতে হলো, বেচারা পার হতে যেতেই মেশিন রীতিমতন আর্তচীৎকার করে উঠল। সিকিউরিটি অফিসারদের জিজ্ঞাসু দৃষ্টির সামনে মুখ কাঁচুমাচু করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হলো তাকে, দেখা গেল, সব কিছু ঠিকই আছে, গোলমাল করেছে বেমক্কা নানা জায়গায় (খাস বাংলায় বললে, চিপায়-চুপায়) মেটাল বোতাম লাগানো হাল-ফ্যাশানের পাতলুন। এবার আর মেশিনে ভরসা করা গেল না, আরেকদফা হস্ত-চালিত তল্লাশীর পরে তার ছাড়পত্র মিললো, আমরাও বুকে ভি (ফর ভেনডেট্টা, থুক্কু, ভিজিটর) ট্যাগ লাগিয়ে চটপট ঢুকে পড়লাম পার্লামেন্ট ভবনে।
ভিক৩
একজন লিঁয়াজো অফিসার ভেতরে ঢুকতেই আমাদের স্বাগত জানালো। মাথা ভর্তি রূপালী চুল, বয়েস পঞ্চাশের এদিক ওদিক, অল্প খানিকটা ঝুঁকে হাঁটে। আর একদম চোস্ত অজি উচ্চারণে ইশকুলের বাংলা ব্যাকরণের সেই পন্ডিত স্যারের ভঙ্গীতে কথা বলে। আমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখালো ভেতরের হাল-চাল।
দুটা রুম আছে এদের সংসদে। একটাকে বোধহয় কেবিনেট বলে, আরেকটার নাম ভুলে গেছি। তবে রং মনে আছে, একটা ঘরের পুরোটা সবুজ, অন্যটার লাল। চেয়ার টেবিল থেকে শুরু করে কার্পেট ইস্তক লাল আর সবুজ রং করা দুই ঘরে। গুগলে খানিকটা ঘাঁটাঘাটি করলে ঠিকঠাক তথ্য মিলিয়ে লেখা যেত সব, কিন্তু ডায়রি বলেই আর এতসব হাবিজাবি করতে ইচ্ছে করছে না।
আমি বাংলাদেশি শুনেই ভদ্রলোক বলে উঠলো, "তুমি বুঝবে আমাদের পার্লামেন্টারি সিস্টেম। তোমাদের আমাদের একইতো, তাই না? "
আমি খুব বিজ্ঞের মত মাথা নাড়লাম, যদিও খুব ভাল করে এসব জানা নেই আমার।

সবুজ ঘরে পেতে রাখা সার বাঁধা চেয়ারগুলোয় বসে পড়লাম আমরা। রূপালী বুড়ো হঠাৎ আমার দিকে আঙুল তুলে বললো, তুমি বসেছ ঠিক ট্রেজারারের চেয়ারটায়। তারপরেই আমার আশ-পাশের চেনা জানা সহপাঠীদের পদবী জেনে নড়ে-চড়ে বসলাম, কেউ শিক্ষামন্ত্রী, কেউ স্বাস্থসেবা মন্ত্রী, কেউ ক্রীড়ামন্ত্রী। আর নিজে এতক্ষণ যে চেয়ারের হাতলে পেছন ঠেকিয়ে আয়েশ করে দাঁড়িয়ে ছিলো, তার গায়ে একটা আদুরে চাপড় মেরে জানালো, এটা হলো প্রিমিয়ারের চেয়ার!
প্রিমিয়ার, মানে এই স্টেটের হর্তা-কর্তা।
ভিক৪মাঝের টেবিলটার উপরে অনেকগুলো সবুজ বই, লাল ঘরে যেগুলোর রং বদলে লাল হয়ে গিয়েছিলো পরে, ওগুলো হলো ভিক্টোরিয়া স্টেটের ল-বুক। সব রকম আইনের অ-আ-ক-খ তোলা আছে ওইখানে। সংসদ অধিবেশনে যখন বচসায় মাতে সরকারি আর বিরোধী পক্ষ, এই বইগুলোর রেফারেন্স চলে আসে সাথে সাথেই।

টেবিলের সমতল থেকে খানিকটা উপরে স্পীকারের আসন। টেবিলের দুপাশে বসে এখানকার প্রিমিয়ার আর বিরোধী দল।
মজা পেলাম স্পীকারের আসনের পাশে সোনালি রঙের ভীম-সুলভ গদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক লোকের ছবি দেখে। বুড়ো জানালো, অনেক আগে নাকি পার্লামেন্টে একটা আজব সিস্টেম চালু হয়েছিলো। স্পীকারের সাথে মতে না মিললে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কয়েকজন জোট বেঁধে খোলা তরবারি হাতে চড়াও হতো স্পীকারের উপর। এরকম বেশ কয়েকজন স্পীকারের মৃত্যুর পর নতুন নিয়ম চালু হলো, তার দেহরক্ষী হিসাবে নিয়োগ দেয়া শুরু হলো সেনাবাহিনীর চৌকষ অফিসারদের।
সেই ঐতিহ্য মেনে এখনো নিয়োগ দেয়া হয়, তবে সেটা ঠিক দেহরক্ষী পদে নয়, বরং ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে। কিন্তু তবু নিয়ম মেনে সেই প্রাণ-রক্ষাকারী গদা হাতে তার একটা লাইফ সাইজ ছবি দাঁড় করিয়ে রাখা হয় স্পীকারের পাশে, বেচারাকে সাহস দিতেই বোধহয়।
অজিদের ঐতিহ্য-প্রীতি দেখে অবাক হতে হয়। ইংল্যান্ডের রাণীকে এখনো রাণী মানে এরা, তাঁর জন্মদিনে লোকে এখানে পাবলিক হলিডে কাটায়। এই নিয়ে নানা প্রশ্নোত্তর চললো, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, রাণী আসলে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করেন এ দেশের শাসনব্যবস্থা? বুড়ো উত্তর দিলো, একেবারেই নিয়ন্ত্রণ করে না। রাণীর ক্ষমতা আছে, মানে এ দেশের লোকেরাই দিয়ে রেখেছে, অস্ট্রেলিয়ার যে কোন আভ্যন্তরীণ ইস্যুতে সুদুর লন্ডনে বসেই তিনি নাক গলাতে পারবেন, কিন্তু রাণী সেই ক্ষমতা কখনোই ব্যবহার করেন না। করবার কোন সম্ভাবনাও নেই।
ভিক৫
রুমগুলোর সাজসজ্জার জাঁকজমক দেখে মুগ্ধ হলাম। সিলিংয়ে সোনালী রঙের যে কারুকাজ, জানা গেলো, সেটা আসলে সোনাই! সারা বছরে সব মিলিয়ে ৩৫ অথবা ৫৩ দিন অধিবেশন বসে এখানে, আর তার সর্বমোট বাজেট বেশ কয়েক মিলিয়ন ডলার।
পার্লামেন্টের সব সদস্যদের ব্যাকগ্রাউন্ড রাজনীতি ঘেঁষা নয় জেনে খুব মজা পেলাম। এখানে অনেকেই আছে ফুটি খেলোয়াড়। ফুটি হলো একটা অজি খেলা, এটাকে রাগবির আরও-এক-কাঠি-জংলি ভার্শন বলা যায়।
জানা গেলো, অস্ট্রেলিয়ার নিয়ম-কানুন আমেরিকানদের মত নয়। এখানে যে কোন অভিবাসী নাগরিকত্ব পাবার পর পার্লামেন্টের সদস্য পদের জন্যে নির্বাচনে লড়তে পারে। এখানেই বর্ন এন্ড ব্রট আপ হতে হয় না। গায়ের চামড়ার রঙও খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। তার একদম নগদ উদাহরণ পেয়ে গেলাম, ভিক্টোরিয়ার বর্তমান গভর্ণর হচ্ছে একজন শ্রী লঙ্কান অভিবাসী।

কথা বলতে বলতেই একজনকে দেখলাম সবুজ ঘরে ঢুকছে। কোট টাই পড়া, সাথে একজন মোটামতন মহিলা আর কমবয়েসী একটা ছেলে, সম্ভবত মহিলার পুত্র। রূপালী বুড়ো প্রিমিয়ারের চেয়ারের হাতলে হেলান দিয়েই তাদের উদ্দেশ্যে হাই জানালো। তারপরেই আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো, "ও হচ্ছে ফার্ন ট্রী গালী আসনের সংসদ সদস্য। খুবই পরিশ্রমী একজন মানুষ। "
আমরা বসে থেকেই তাকে হাই বললাম। সাথের মহিলা সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের জানালো, ওঁরা ওই এলাকারই বাসিন্দা, ট্রাফিক লাইট নিয়ে একটা সমস্যার কারণে সরাসরি দেখা করতে চলে এসেছে এমপি-র সাথে। কাজ শেষ, এমপি তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সংসদ দেখাচ্ছে তাদের।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস সবার অগোচরে পার্লামেন্ট ভবনের বাতাসে ছড়িয়ে দিলাম।
বাংলাদেশে যেখানে আমার বাড়ি, ওই এলাকার প্রয়াত সংসদ সদস্যকে এলাকাবাসী একটা মজার নাম দিয়েছিলো, একবার হোসেন। ভদ্রলোকের নাম ছিলো আকবর হোসেন, কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগের সময়টুকু বাদে তাঁকে আর কখনোই এলাকায় দেখা যেত না, পাঁচ বছরে ওই একবারই তিনি আসতেন আমাদের এলাকায়। তাই নাম পালটে লোকে তাকে ডাকতো একবার হোসেন।
ভিক৬
পার্লামেন্টের মেম্বার হবার সুবিধা কি? এক‌টা ম‌জার ক‌থা জান‌লাম। অস্ট্রেলিয়ার আইনে এম‌নিতে নিয়‌ম আছে, কেউ কারো বিরুদ্ধে জ‌ন‌স‌ম্মুখে কুৎসা র‌টালে যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে স্যু ক‌রে দিতে পারে।
কিন্তু পার্লামেন্টারি প্রিভিলেজ ব‌লে এক‌টা টার্ম আছে এখানে, যার সার ক‌থা হ‌লো, পার্লামেন্টের ভেত‌রে যে যেম‌ন ইচ্ছা অভিযোগ তুল‌তে পার‌বে, এই ক‌থার ভিত্তিতে কারো বিরুদ্ধে কোন আইনি অভিযোগ ক‌রা যাবে না, অর্থ্যাৎ স্যু-এর প‌থ ব‌ন্ধ‌।
আম‌রা বেশ ম‌জা পেলাম এ ক‌থা শুনে। কিন্তু তার‌প‌রেই বুড়ো একটা তথ্য জানালো।
প্রায় বছর বিশেক আগে একজন এমপি তার এই পার্লামেন্টারি প্রিভিলেজের নিদারুণ অসদ্ব্যবহার করেছিলো। সেই এমপির স্ত্রী ছিলো বেশ বিখ্যাত একজন ব্যারিষ্টার, তাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই বনিবনা হচ্ছিলো না। ডিভোর্সের কথা-বার্তা চলছিলো তখন। এর মধ্যেই একদিন সেই এমপি পার্লামেন্টে বসে তার স্ত্রী সম্পর্কে উক্তি করে বসে, ভদ্রমহিলা নাকি পেশাগতভাবে অসৎ, দাগী আসামীদের সাথে ওঠাবসা আছে তার- এরকম অভিযোগও করে বসে।
যেহেতু পার্লামেন্টে বসে বলা, ভদ্রমহিলা তাই কোন রকম আইনী আশ্রয় নিতে পারে নি। রাগে দুঃখে এবং অপমানে দুদিন বাদেই মহিলা আত্মহত্যা করে বসে! তার বেশ কিছুদিন বাদেই জানা যায় মহিলা নিষ্কলুষ ছিলো। এমপি-কে তখন পদত্যাগ করতে হয়, এবং পার্লামেন্টারি প্রিভিলেজের উল্টা-পাল্টা ব্যবহারের কারনে তাকে সোজা জেলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
সেই এমপি নাকি এখনো বেঁচে আছে, এবং জেলেই জীবন কাটাচ্ছে।
রূপালী বুড়ো গম্ভীর স্বরে আমাদের বললো, "গুরু দায়িত্ব নিতে হলে সেটার ব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হয়, নইলে অঘটন ঘটার সম্ভাবনা প্রবল।" আমার এ কথা শুনে মনে হলো, হুম, এ কথা সবাইই বোঝে, শুধু যাদের হাতে দায়িত্ব পড়ে তারা ছাড়া।

সবুজ ঘর ছেড়ে লাল ঘরে চলে এলাম আমরা খানিক পরেই।
এখানে জাঁকজমক আরো বেশি। আমাদের মতন আরো কিছু ভিজিটরদের দেখলাম টুকটুক করে ছবি তুলছে। আর এতক্ষণে ছবি তোলার কথা মাথায় এলো আমার। সাথে ক্যামেরা নেই, তাই অবশেষে ফোনটাই বের করতে হলো। নোকিয়া ই৬৫-র ক্যামেরা কোয়ালিটি খুব একটা খারাপ হবার কথা না।
লাল ঘরে আরো কিছুক্ষণ চললো আলাপচারিতা। সঙ্গী সাথী অনেকেই আড়মোড়া ভেঙ্গে ছবি তুলতে শুরু করলো এবার।
এর মাঝেই দেখা পেলাম আরেকজন এমপির। এই ভদ্রমহিলা নাকি প্রায় ১৩ বছর ধরে সংসদ সদস্য। এতদিন সরকারী দলেই ছিলো, সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিরোধী দলে গেছে। ভীষণ হাসি-খুশী, ছুটতে ছুটতে কোথাও যাচ্ছিল, মাঝে একবার রূপালী বূড়োকে চুমু খেতে থামলো শুধু। আমাদের সাথেও হাই-হ্যালো করলো কিছুক্ষণ। অনেক বয়েস, কিন্তু কথা বলার সময় মনে হচ্ছিলো সদ্য ইশকুল পাশ ছটফটে কোন কিশোরী যেন!
ভদ্রমহিলা চলে যেতেই রূপালী বুড়ো বললো, তোমাদের এবার এঁর গল্প শোনাই। প্রায় তের বছর ধরে সংসদ সদস্য, নিজের স্বামী সংসারও সামলায় সে, আবার এর মাঝেও প্রায় পঁচিশ বছর ধরে একটা রুটিন আছে তাঁর। প্রতি বুধবার ভোর তিনটেয় উঠে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার ড্রাইভ করে একটা আদিবাসী ক্যাম্পে যায় এই মহিলা। ওখানে গিয়ে ছয়শ লোকের খাবার রান্নার তদারকি করে। রান্না ও পরিবেশন শেষে বাসন কোসন পরিষ্কারের ঝুট ঝামেলা শেষ করে তবে বাড়ি ফিরে সে।
এই পঁচিশ বছরে বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।

আমি নিঃশ্বাস আটকে বসে শুনলাম কেবল। এতক্ষণে বুড়োর প্রথম প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর মাথায় এলো আমার।
হু, আমাদের দুই দেশের পার্লামেন্টারি সিস্টেম একই, শুধু কেবল, তার মানুষগুলোই বৈপরীত্যে ভরা।

Popular posts from this blog

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

মধ্যাহ্নভোজ | উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ | রূপান্তরঃ তারেক নূরুল হাসান

আরেকটিবার-