আমি গাইবো বিজয়েরই গান...

মানুষের মানসিক গঠনটাই আসলে এরকম, বিশেষ করে অপরাধী মন যাদের। নিজের অপরাধ ঢাকবার জন্যে আপন মনেই নিজেকে প্রবোধ দেয়, নিজের কৃতকর্মকে অস্বীকার করে। একটা পর্যায়ে এসে ঐ প্রবোধটাই বিশ্বাস বনে যায় আপনাতেই।
জামাতে ইসলামী নামে ঘৃণ্যতম রাজনৈতিক দলটির কুখ্যাত নেতা, একাত্তরের স্বীকৃত রাজাকার আলী আহসান মুজাহিদ ঠিক এরকম কোন বিশ্বাস থেকেই মন্তব্য করেছিলো, ' বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই।'
কতখানি ঔদ্ধত্য পেয়ে বসলে মানুষ এরকম বলতে পারে এটুকু কল্পনার কোন অবকাশ আর নেই এখন। ঠিক যেন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার জন্মকে, আমার অস্তিত্বকে অস্বীকার করার মতন তীব্রতর জ্বালা ধরানো কোন অনুভূতির জন্ম হয় মনে এই কথা শুনে।
জামাতী নেতা ও তাদের সমর্থকদের নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টার কোন কমতি ছিলো না এতদিন। কিন্তু এরকম করে পুরো ইতিহাসকে অস্বীকার করার মতন স্পর্ধা এর আগে দেখা যায় নি।
মুজাহিদের বক্তব্য নিয়ে পুরো দেশে যখন আলোড়ন হচ্ছে, তখন পর্দায় হাজির হলেন আরেক গোপাল ভাঁড়, জনান শাহ আব্দুল হান্নান। ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবে পরিচিত, কিন্তু জামাতে ইসলামীর অনুগত পরামর্শক হিসেবে নিজের জায়গা করেছেন অনেক আগেই।
একুশে টিভির এক টক শোতে তিনি আমাদের সামনে নতুন অনেক তত্ব ও তথ্য হাজির করলেন। তারমধ্যে অন্যতম হলো, মুক্তিযুদ্ধ আসলে ছিলো একটা সিভিল ওয়ার। মুক্তিযুদ্ধের নিহত শহীদের সংখ্যা তিরিশ লক্ষ কিনা সেটা উনি 'জানেন না', তবে হামিদুর কমিশনের ছাব্বিশ হাজারের তত্বকেও তিনি অস্বীকার করতে পারেন না!!
ভেবে পাই না, বাংলাদেশ সংবিধানের মূলস্তম্ভ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, সেটাকে অস্বীকার করে এই লোকটা কেমন করে বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয়ের মতন এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলো এতগুলো বছর?

আরিফুর রহমানের নির্দোষ কৌতুকের মধ্যে মহানবীর অবমাননার গন্ধ খুঁজে পেয়ে কিন্তু উম্মত্ত মোল্লা জুম্মার নামাজের পরে কয়েক কপি প্রথম আলো পুড়িয়ে সারা দেশে জিহাদ ঘটিয়ে দিলো। কিন্তু আলী আহসান মুজাহিদ আর শাহ আব্দুল হান্নানের এমন সব মন্তব্যের তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না। জনগণের কাছ থেকেও না, সরকারের কাছ থেকেও না।
এই নির্লিপ্ততা বড় কষ্টকর। বড় হতাশার।

Popular posts from this blog

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

মধ্যাহ্নভোজ | উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ | রূপান্তরঃ তারেক নূরুল হাসান

আরেকটিবার-