জলদস্যুদের দেখে ফিরে-


কি জানি, একদিন হয়তো লোকে জনি ডেপকেও ভুলে যাবে, কিন্তু মনে রাখবে ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো-কে। যারা রাখবে তাদের মধ্যে আমার নাম থাকবে এক নম্বরে, অথবা তারও আগে।

ক্যারিবিয়ান পাইরেটসদের তিন নম্বর পর্বটা দেখলাম, থিয়েটারে আসার দু'দিন বাদেই। এবং মুগ্ধ হলাম। টানা তিন পর্বে একই আমেজ বজার রাখা সহজ কথা নয়। ম্যাট্রিক্স পারে নি, টার্মিনেটরও ঝুলে গেছে, কিন্তু পাইরেটস অব দ্যা ক্যারিবিয়ান- অ্যাট ওয়ার্ল্ডস এন্ড, একেবারে হাই ডিস্টিংশান সহ পাশ!

এবারে কাহিনি জটিল হয়েছে অনেক। আগের গুলোর মত শুধু চোখ বুলিয়েই রস পাওয়া যাবে না। এবারে মাথা খাটাতে হয়েছে, মনটাকে আরেকটু বেশি মনোযোগী করতে হয়েছে।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোথাও এতটুকু বোরিং লাগে নি। পাইরেট ম্যুভি হতে যা যা লাগে, সবই ছিলো এখানে। আগের পর্বে যেগুলো বাদ পড়েছিলো- যেমন- জাহাজে জাহাজে যুদ্ধ- এবারে সেগুলো এসেছে, এবং বলাই বাহুল্য, স্পেশাল ইফেক্টের কারিগরিতে সেগুলোও হয়েছে দেখবার মতন!

কিয়েরা নাইটলিকে এবারে আরেকটু মোহময়ী লেগেছে। সেরকম আবেদন আনার চেষ্টাও ছিল অবশ্য। ডেভি জোন্সএর প্রেমিকা ক্যালিপসো, এটা আবিষ্কার করে অবাক হয়েছি, এরকম সম্ভাবনার কথা একবারও মাথায় আসে নি!

চৌ ইয়ুন-ফ্যাটকে দেখে খুশি হয়েছি। পাইরেট লর্ডদের আলোচনা সভায় জনি ডেপের কীর্তিকলাপগুলো, যদি সম্ভব হতো- ফ্রেম করে বাঁধিয়ে রাখতাম!

আগের যে কোন পর্বের চেয়ে একশান এসেছে অনেক বেশি, তবু, পুরো ছবির রসবোধে কোথাও এতটুকু ঘাটতি পড়ে নি। এই মুহুর্তে যখন আমি জাহাজ উলটে পৃথিবীর অপর প্রান্তে চলে যাবার জন্য শিঁড়দাড়া সোজা করে বসে আছি, পরের মুহুর্তেই তলোয়ার চালাতে চালাতে অরল্যান্ডো ব্লুমের 'উইল ইউ ম্যারি মি' শুনে হাসতে হাসতে চমক কাটাচ্ছি!
শেষটুকুও চমৎকার হয়েছে। একটা দুঃখ ভরা আমেজ, অনেক শান্তির সমাপ্তি, তবু কিছু অপ্রাপ্তি
থেকে যাওয়া। ঠিক যেন বড় দৈর্ঘ্যের কোন ছোট গল্প!

সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটা ছবি। তিন পর্বের মধ্যে সর্বোত্তম বললেও অত্যুক্তি হবে না।
আপাতত ডিভিডিতে আরেকবার দেখার জন্যে অপেক্ষায় আছি। ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো-কে নিজের ঘরে বসে আরেকবার সেলাম না ঠুকতে পারলে বুকের ভেতর আফসোস রয়ে যাবে!
হেইল পাইরেটস!

Popular posts from this blog

The Boy, the Mole, the Fox and the Horse | Charlie Mackesy

মধ্যাহ্নভোজ | উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ | রূপান্তরঃ তারেক নূরুল হাসান

আরেকটিবার-