Posts

Showing posts from June, 2006

আসুন, আমরা একটি প্ল্যানচেটের আয়োজন করি...

Image
প্রতিটা পোষ্টে সেই একই নাটকের পুনরাবৃত্তি হয়। কুশীলবও আমরাই। একদল আস্ফালন করেন, প্রমান করা হোক!! আমরা নতজানু হয়ে নিজেদের প্রমান হাজির করি। একগাদা ওয়েবসাইট, কিছু ইতিহাসের দলিল, অনেকগুলো বই, কিছু পেপার কাটিং..। কিন্তু আমরা কি জানি, সেইসব প্রমান যে আসলে ভ্রান্ত? আসলে কিছু উর্বর মস্তিষ্কের মানুষের লেখা থ্রিলার? না জানি না। ভ্রান্ত তো হবেই, ওগুলো তো গোলাম আযম তার স্মৃতিতে লিখে রাখেন নাই। মুক্তিযুদ্ধে নিহতের পরিবার মিথ্যে বলেছেন, এটাই তো সত্য, কারন গোলাম আযম তো মিথ্যে বলেন নাই! এই নাটক এখানেই শেষ হবে। কদিন পর আরেকটি পোষ্ট হবে। সেখানে আবারো বলা হবে প্রমাণ করা হোক! আমরা বাবার রক্তভেজা শার্ট আর মায়ের ছেঁড়া শাড়ি বুকের মধ্যে লুকিয়ে আবারো আমাদের প্রমান নিয়ে হাজির হবো। এইভাবেই, মুক্তিযুদ্ধের পৌন:পুনিক অপমান চলতেই থাকবে, চলতেই থাকবে...। যতদিন না গোলাম আযম তার পবিত্র স্মৃতিকথা নতুন করে লিখবেন! আসুন, তার চেয়ে আমরা বরং একটি প্ল্যানচেটের আয়োজন করি। ওখানে ডেকে আনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষ আর হতভাগা বুদ্ধিজীবিদের। ওদের আত্মা এসে আমাদের হাত ধরে বলুক, বাবারা, এইবারটি থামো, আর কত অপমান করবে

ভাললাগায় লোপামুদ্রা ...

Image
লোপামুদ্রার গলায় আমার শোনা প্রথম গান বেনীমাধব। এইচএসসি-র পরে তখনো ঢাকায় নতুন। ঢাকা যে আসলে ঠিক বাংলাদেশের ভেতরের কোন শহর নয়, সেটা বুঝে গেছি ততদিনে। সব কিছুতেই যেন যোজন যোজন ফারাক আমাদের ছোট্ট মফস্বল শহর কুমিল্লার সাথে। সেই বোধটা আরেকটু দৃঢ় করতে সে বছর গুলশানে আমাদের এক বন্ধুর বাসায় গেলাম থার্টিফার্স্ট নাইটের মজা নিতে। আমরা প্রায় ১০/১২ জন। বিকেলের দিকেই পৌঁছে গেছি ওর গুলশান-২ নম্বরের বাসায়। কিন্তু রাত হতেই বন্ধুর মা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন, বেরুনো যাবে না। কোথা থেকে খবর পেয়েছেন, রাস্তায় পুলিশ আছে, ১২ টায় কেউ বের হলেই ধরে নিয়ে যাবে। আমাদের অনেক কাকুতি মিনতিও গলাতে পারলো না তাঁকে। কি আর করা, এক ডজন টগবগে নওজোয়ান আমরা তখন ওর রুমে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। কবিতা থেকে ক্রিকেট আর মোনালিসা থেকে পামেলা কেউই বাদ নেই। আড্ডার ফাকে মাঝে কার যেন একবার টয়লেট চেপেছিল। সে বাইরে গিয়ে ফিরে এসে ফিকফিক করে হাসতে লাগলো। কি হলো কি হলো? না, আন্টি খুব আজিব কিসিমের গান শুনছেন পাশের রুমে বসে, খালি নাকি শোনা যাচ্ছে- তোমার বাড়ি যাব, তোমার বাড়ি যাব...। এধরনের আড্ডার কোন আগামাথা থাকে না। চরম সিরিয়াস ব্যাপারও হয়ে যায় নিছক

মামা বাড়ির আবদার

Image
মামাবাড়ির আব্দার- ---------------- আরে ভাই, ৩৫ বছর পরে ঐসব চেচামেচি করার কি দরকার? সব ভুলে যান। নিজেদের ঐক্য নষ্ট করবেন না। আসেন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ি। আমার কথা- ---------- বন্ধুদের মধ্যে একটা রসিকতা প্রচলিত আছে- " কলা ছিলছো কেন, আবার বুজাইয়া দাও''! আব্দারের চরমসীমা বুঝাতে আমরা এই বাক্য ব্যবহার করি। বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক দূরে আছি। আড্ডাও হয় না- কিন্তু এই আব্দারের কথা মনে পড়ল আবার। মামাবাড়ির আব্দার! ৩৫ বছর কি অনেক লম্বা সময়, ৩০ লক্ষ মানুষের রক্ত ধুয়ে মুছে ফেলবার জন্যে? কেন আমাদের ইতিহাসকে ভুলে যেতে হবে? কেনই বা আমাদের ভুলে যেতে বলা হবে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জনের কথা? না, আমরা ভুলবোনা। ভুলতে চাইবে তারাই যাদের জন্যে মুক্তিযুদ্ধ মানে লজ্জা, মানে পরাজয়, মানে নিজেদের নীচতা আর বিশ্বাসঘাতকতার জ্বলজ্বলে দলিল। ভুলে যেতে চাইবে রাজাকাররা, আমরা না। কি করেনি তারা? একটা দেশের জন্মলগ্নে যতভাবে সম্ভব তার বিরোধীতা করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিয়েছে পাকসেনাদের হাতে, নিজেরা অস্ত্র তুলে নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে, হাজার হাজার নারীদের ঠেলে দিয়েছে পাকসেনাদের বিকৃত লালসার সামনে!! যখন

ভাষাই ধর্ম ভাষাই দেশঃ আরেক ফাল্গুনের গল্প।

Image
কমলা ভট্টাচার্য্য। মাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়া এক কিশোরী। এখনো রেজাল্ট বের হয় নি, তার আগেই ইতিহাসের পাতায় নাম। সম্ভবতঃ ইতিহাসের প্রথম নারী ভাষা শহীদ। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের বোন এই কমলা। ১৯৬১ সালের ২১ মে। আসামের ছোট্ট শহর শিলচর। রাজ্যের প্রধান ভাষা অসমীয়া হলেও বরাক ভ্যালির এই অঞ্চলে বাংলা ভাষাভাষীদেরই আধিক্য। পাকিস্তান হবার এক বছর পর ১৯৪৮ সালে রেভারেন্ডেমের মাধ্যমে সুরমা ভ্যালি (বর্তমানে সিলেট বিভাগ ) পুর্বপাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু বৃহত্তর সিলেটের তিন-চতুর্থাংশ নিয়ে বরাক ভ্যালি থেকে যায় আসামে। ১৯৬১ সালে আসাম প্রাদেশিক সরকার শুধু অসমীয়াকেই রাজ্যের একমাত্র সরকারী ভাষা ঘোষনা দিলে ক্ষোভ দানা বাঁধে বাংগালিদের ভেতরে। ক্রমশঃ রুপ নেয় তা আন্দোলনে। প্রথমে সত্যাগ্রহ। তারপর সহিংস। আন্দোলনের চুড়ান্ত পর্বে , ১৯ মে, পুলিশ গুলি চালায় মিছিলে। শহীদ হন কমলা ভট্টাচার্য্য সহ মোট ১১ জন। রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বাধ্য হয়। দেয়াল গড়ে ওঠে মানচিত্র বদলে যায়। তবু রফিক জব্বার কমলার মত ভাইবোনেরা আমাদের মাথা নত না করতে শেখায়। আভুমি আনত - শ্রদ্ধা একুশে-ঊনিশের সকল ভাষা শহীদদের জন্য।

আমার প্রতিবাদ

Image
এক খাবলা মাটি হাতে লইয়া নিজের গায়ে মাখ- মাটিতে লাগাইয়া নাক; ঘ্রান নে রে ব্যাটা নিশ্বাস ভইরা নে, মায়ের দুধের গন্ধ পাবি সেখানে। এই সবুজ জমিনে একবার- তোর বাপের লাংগলের লগে গড়াগড়ি দে, এই নদীতে তিনখান ডুব লাগা, শুশুকেরা যেমন কইরা ডুবে। এই যে ক্ষেতের আইল, তার মইধ্যে দিয়া দৌড় লাগা একখান। আসমানে উড়তাছে ভো-কাট্টা ঘুড়ি, হ দেখি তার সমানে সমান! তারপর, মাথাখান উঁচা কইরা আসমানের দিকে তাকা দেহি একবার। কি দ্যাখা যায়? চাঁন-তারা?? আরে বেকুব, সর্বহারা- সিনা টান কইরা দ্যাখ, চক্ষু দুইটা খুইলা দ্যাখ- সুর্য দেখবি খালি, টকটইক্যা লাল সূর্য ! আসমান আর জমিন একাকার কইরা- লালে আর সবুজে মাখামাখি... আমার মায়ের আঁচলের লাহান- আঁচলের মতন পতাকার লাহান। ৭।০৬।২০০৬ ---------- এই কবিতার একটা প্রেক্ষাপট আছে। ( অবশ্য সব কবিতারই একটা প্রেক্ষাপট থাকে।) সামহোয়্যার ইন ব্লগে কোনো এক পাকিস্তান প্রেমিক হুট করে পাকিস্তানের পতাকা সহ কিছু পোষ্ট দেয়া শুরু করে। ভীষন অশ্লীল মনে হয়েছিল আমার সেটা। তারই প্রতিবাদে লেখা এই কবিতা। এটা একদম র'- কপি। পরে কখন সুযোগ পেলে এডিট করব হয়তো, বা হয়তো করবো না।